ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

টর্নেডোর আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণহানি ২৭, বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • / ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রলয়ংকরী টর্নেডোর আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ অঙ্গরাজ্যে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। মিশিগান ও টেনেসিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন পার করছেন ৪ লাখেরও বেশি গ্রাহক। ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ির সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের আশঙ্কা, মারাত্মক টর্নেডোর ঝুঁকিতে আছে ইলিনয় ও টেক্সাস। এদিকে, তীব্র ঝড় ও টানা বৃষ্টিতে মারাত্মক বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। বৈরি আবহাওয়ার কারণে সয়াবিন রপ্তানিতে ভাটা পড়ার আশঙ্কা।

নড়ে গেছে বসতবাড়ির ভিত, ভেঙে পড়েছে ছাদ, রাস্তায় পড়ে আছে মাটি থেকে উপড়ে যাওয়া গাছ। এক রাতের ব্যবধানে কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই অঙ্গরাজ্য, কেন্টাকি ও মিসৌরির গুরুত্বপূর্ণ শহর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০০ বেশি ভবন। পরিস্থিতি এতটাই অপ্রত্যাশিত যে এখনও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব করে উঠতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে চলছে অভিযান। বিবিসি জানায়, মিসৌরি ও কেন্টাকিতে ঝড়ের তাণ্ডবে শনিবার (১৭ মে) বিকেল থেকে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে প্রায় দেড় লাখ স্থাপনা। ভবন ধস ও গাছ উপড়ে গেল দুই দিনে আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা। মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, কেন্টাকির পর টর্নেডোর আঘাতের ঝুঁকিতে আছে ইলিনয়। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে টেক্সাসের বাসিন্দাদেরও।

স্থানীয় সময় শনিবারের ভোরে আঘাত হানা টর্নেডোর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছিল কেন্টাকির দক্ষিণ-পূর্বে লরেল কাউন্টি ও মিসৌরির ঐতিহাসিক সেইন্ট লুইস শহরে। সংখ্যার বিচারে হতাহতের মধ্যে ৯৮ শতাংশই এই দুই অঞ্চলের বাসিন্দা। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের তালিকায় আছে ইলিনয়ের মারিয়নসহ কয়েকটি এলাকা।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘এখানে এসে দেখলাম বেশ কিছু স্থাপনা একেবারে ধসে গেছে। এখানে যে ৩টি খুঁটি ভেঙে গেছে এমেরিনের লোক এসে সংস্কার করে দেবে। আমি নেলসনে কাজ করি। আমরা ভেঙে পড়া গাছটা সরানোর চেষ্টা করছি।’

এদিকে প্রায় আধ ডজন টর্নেডো আঘাত হানার পর কেন্টাকি, মিসৌরি ও ইলিনয়ের গভর্নরদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নয়েম। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্য দিয়েছেন ফেডারেল সহায়তার আশ্বাসও।

অন্যদিকে, তীব্র ঝড় আর বৃষ্টির কারণে মারাত্মক বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। শনিবার দিনভর বৃষ্টির সাথে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় বুয়েনোস আইরেসের উত্তরাঞ্চল থেকে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতাও।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর বুয়েনোস আইরেসের ছাড়াও অন্যান্য কয়েকটি শহরে গড়ে ৬-১০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর। কায়াক ও নৌকার সাহায্যে এখনও উদ্ধার অভিযান জারি রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বৈরি আবহাওয়ার কারণে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন খাদ্য রপ্তানির জন্য প্রসিদ্ধ বুয়েনোস আইরেসের চাষিরা। বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সয়াবিনের ফলন আসতে আরও দেরি হবে এমন আশঙ্কা করছেন তারা।

প্রক্রিয়াজাত সয়া ও সয়াবিন তেলের রপ্তানিকারক দেশের তালিকার শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। পাশাপাশি ভুট্টা ও গম উৎপাদনেও এগিয়ে আছে দেশটি। ফসল সংগ্রহের মৌসুমে এই বিপর্যয় আর্জেন্টিনার অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

টর্নেডোর আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণহানি ২৭, বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি

আপডেট সময় : ০১:২৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

প্রলয়ংকরী টর্নেডোর আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ অঙ্গরাজ্যে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। মিশিগান ও টেনেসিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন পার করছেন ৪ লাখেরও বেশি গ্রাহক। ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ির সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের আশঙ্কা, মারাত্মক টর্নেডোর ঝুঁকিতে আছে ইলিনয় ও টেক্সাস। এদিকে, তীব্র ঝড় ও টানা বৃষ্টিতে মারাত্মক বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। বৈরি আবহাওয়ার কারণে সয়াবিন রপ্তানিতে ভাটা পড়ার আশঙ্কা।

নড়ে গেছে বসতবাড়ির ভিত, ভেঙে পড়েছে ছাদ, রাস্তায় পড়ে আছে মাটি থেকে উপড়ে যাওয়া গাছ। এক রাতের ব্যবধানে কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই অঙ্গরাজ্য, কেন্টাকি ও মিসৌরির গুরুত্বপূর্ণ শহর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০০ বেশি ভবন। পরিস্থিতি এতটাই অপ্রত্যাশিত যে এখনও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসাব করে উঠতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে চলছে অভিযান। বিবিসি জানায়, মিসৌরি ও কেন্টাকিতে ঝড়ের তাণ্ডবে শনিবার (১৭ মে) বিকেল থেকে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে প্রায় দেড় লাখ স্থাপনা। ভবন ধস ও গাছ উপড়ে গেল দুই দিনে আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা। মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, কেন্টাকির পর টর্নেডোর আঘাতের ঝুঁকিতে আছে ইলিনয়। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে টেক্সাসের বাসিন্দাদেরও।

স্থানীয় সময় শনিবারের ভোরে আঘাত হানা টর্নেডোর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছিল কেন্টাকির দক্ষিণ-পূর্বে লরেল কাউন্টি ও মিসৌরির ঐতিহাসিক সেইন্ট লুইস শহরে। সংখ্যার বিচারে হতাহতের মধ্যে ৯৮ শতাংশই এই দুই অঞ্চলের বাসিন্দা। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের তালিকায় আছে ইলিনয়ের মারিয়নসহ কয়েকটি এলাকা।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘এখানে এসে দেখলাম বেশ কিছু স্থাপনা একেবারে ধসে গেছে। এখানে যে ৩টি খুঁটি ভেঙে গেছে এমেরিনের লোক এসে সংস্কার করে দেবে। আমি নেলসনে কাজ করি। আমরা ভেঙে পড়া গাছটা সরানোর চেষ্টা করছি।’

এদিকে প্রায় আধ ডজন টর্নেডো আঘাত হানার পর কেন্টাকি, মিসৌরি ও ইলিনয়ের গভর্নরদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নয়েম। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্য দিয়েছেন ফেডারেল সহায়তার আশ্বাসও।

অন্যদিকে, তীব্র ঝড় আর বৃষ্টির কারণে মারাত্মক বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। শনিবার দিনভর বৃষ্টির সাথে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় বুয়েনোস আইরেসের উত্তরাঞ্চল থেকে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতাও।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর বুয়েনোস আইরেসের ছাড়াও অন্যান্য কয়েকটি শহরে গড়ে ৬-১০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর। কায়াক ও নৌকার সাহায্যে এখনও উদ্ধার অভিযান জারি রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বৈরি আবহাওয়ার কারণে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন খাদ্য রপ্তানির জন্য প্রসিদ্ধ বুয়েনোস আইরেসের চাষিরা। বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সয়াবিনের ফলন আসতে আরও দেরি হবে এমন আশঙ্কা করছেন তারা।

প্রক্রিয়াজাত সয়া ও সয়াবিন তেলের রপ্তানিকারক দেশের তালিকার শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। পাশাপাশি ভুট্টা ও গম উৎপাদনেও এগিয়ে আছে দেশটি। ফসল সংগ্রহের মৌসুমে এই বিপর্যয় আর্জেন্টিনার অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।