ঢাকা ১১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাকিস্তানে সেনা অভিযানে ১২‘ভারতীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসী’ নিহত

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান গ্রুপ এবং বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা (আইএসপিআর)। দেশটিতে নিষিদ্ধ এই সংগঠনগুলোকে ভারত মদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে পাকিস্তান।

মঙ্গলবার (২০ মে) সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা জানিয়েছে, পাক সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ‘ভারতীয় প্রক্সি’ সংগঠনের ১২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এ ছাড়া শহিদ হয়েছেন পাকিস্তানি সেনার দুই সদস্য।

দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) জানিয়েছে, শনিবার ও রোববার পাক সেনার সাথে নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান গ্রুপ এবং বেলুচিস্তানে নিষিদ্ধ বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা ভিত্তিক অভিযান (আইবিও) পরিচালিত হয়েছে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াত জেলায় একটি অভিযান চালানো হয়, যেখানে সেনারা শত্রুর অবস্থানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে এবং “পাঁচজন ভারতীয় স্পনসরড” সন্ত্রাসীকে “নরকে” পাঠিয়েছে। এ ছাড়া ওই জেলায় আরও একটি অভিযানে দুই “ভারতীয় স্পনসরড” সন্ত্রাসী “সফলভাবে নিষ্ক্রিয়” হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে।

উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার মির আলীর জেনারেল এলাকায় আরেকটি ঘটনায় সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা বাহিনীর একটি কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালালে সেনাদের প্রতিক্রিয়ায় দুই “ভারতীয় মদদপুষ্ট” সন্ত্রাসীকে “নরকে পাঠানো হয়” বলে জানায় আইএসপিআর।

সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা আরও বলেছে, তীব্র গুলি বিনিময়ের সময় দুই সাহসী সন্তান, সিপাহী ফরহাদ আলী তুরি (বয়স ২৯ বছর, কুর্রাম জেলার বাসিন্দা) এবং ল্যান্স নায়েক সাবির আফ্রিদি (বয়স ৩২ বছর, কোহাট জেলার বাসিন্দা) বীরত্বের সাথে লড়াই করে চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করে শহিদ হন।

প্রথমে বেলুচিস্তানে সংঘর্ষ বাঁধে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, আওরান জেলার গিশকুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের অবস্থানে সেনারা সন্ত্রাসীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং তীব্র গুলি বিনিময়ে “ভারত-স্পন্সর সন্ত্রাসী ইউনাস” নিহত হয়। কেচ জেলার তুরবাত সিটিতে আরেকটি সংঘর্ষে দুই ভারতীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীকে সফলভাবে নিষ্ক্রিয় করে নিরাপত্তা বাহিনী।

এ সময় সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসী সতর্ক করে বলেছে, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জাতির সাথে তাল মিলিয়ে বেলুচিস্তানের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতি নষ্ট করার ভারতীয় প্রক্সিদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি সফল অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন এবং এটিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী উপাদান নির্মূল এবং দেশ রক্ষার জন্য আমাদের সংকল্প অটল থাকবে।’

পাক প্রধানমন্ত্রীও শেহবাজ শরীফও অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাদের পেশাদার দক্ষতা ও “ভারতীয় এজেন্ডার” বিরুদ্ধে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশংসা করেছেন তাদের।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত মার্চ মাসে জঙ্গি সহিংসতা এবং নিরাপত্তা অভিযান তীব্রতর হয়েছে দেশটিতে। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ১০০ ছাড়িয়ে গেছে জঙ্গি হামলার সংখ্যা।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানে সেনা অভিযানে ১২‘ভারতীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসী’ নিহত

আপডেট সময় : ১২:৫২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান গ্রুপ এবং বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা (আইএসপিআর)। দেশটিতে নিষিদ্ধ এই সংগঠনগুলোকে ভারত মদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে পাকিস্তান।

মঙ্গলবার (২০ মে) সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা জানিয়েছে, পাক সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ‘ভারতীয় প্রক্সি’ সংগঠনের ১২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এ ছাড়া শহিদ হয়েছেন পাকিস্তানি সেনার দুই সদস্য।

দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) জানিয়েছে, শনিবার ও রোববার পাক সেনার সাথে নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান গ্রুপ এবং বেলুচিস্তানে নিষিদ্ধ বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা ভিত্তিক অভিযান (আইবিও) পরিচালিত হয়েছে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াত জেলায় একটি অভিযান চালানো হয়, যেখানে সেনারা শত্রুর অবস্থানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে এবং “পাঁচজন ভারতীয় স্পনসরড” সন্ত্রাসীকে “নরকে” পাঠিয়েছে। এ ছাড়া ওই জেলায় আরও একটি অভিযানে দুই “ভারতীয় স্পনসরড” সন্ত্রাসী “সফলভাবে নিষ্ক্রিয়” হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে।

উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার মির আলীর জেনারেল এলাকায় আরেকটি ঘটনায় সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা বাহিনীর একটি কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালালে সেনাদের প্রতিক্রিয়ায় দুই “ভারতীয় মদদপুষ্ট” সন্ত্রাসীকে “নরকে পাঠানো হয়” বলে জানায় আইএসপিআর।

সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা আরও বলেছে, তীব্র গুলি বিনিময়ের সময় দুই সাহসী সন্তান, সিপাহী ফরহাদ আলী তুরি (বয়স ২৯ বছর, কুর্রাম জেলার বাসিন্দা) এবং ল্যান্স নায়েক সাবির আফ্রিদি (বয়স ৩২ বছর, কোহাট জেলার বাসিন্দা) বীরত্বের সাথে লড়াই করে চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করে শহিদ হন।

প্রথমে বেলুচিস্তানে সংঘর্ষ বাঁধে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, আওরান জেলার গিশকুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের অবস্থানে সেনারা সন্ত্রাসীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং তীব্র গুলি বিনিময়ে “ভারত-স্পন্সর সন্ত্রাসী ইউনাস” নিহত হয়। কেচ জেলার তুরবাত সিটিতে আরেকটি সংঘর্ষে দুই ভারতীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীকে সফলভাবে নিষ্ক্রিয় করে নিরাপত্তা বাহিনী।

এ সময় সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসী সতর্ক করে বলেছে, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জাতির সাথে তাল মিলিয়ে বেলুচিস্তানের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতি নষ্ট করার ভারতীয় প্রক্সিদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি সফল অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন এবং এটিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী উপাদান নির্মূল এবং দেশ রক্ষার জন্য আমাদের সংকল্প অটল থাকবে।’

পাক প্রধানমন্ত্রীও শেহবাজ শরীফও অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাদের পেশাদার দক্ষতা ও “ভারতীয় এজেন্ডার” বিরুদ্ধে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশংসা করেছেন তাদের।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত মার্চ মাসে জঙ্গি সহিংসতা এবং নিরাপত্তা অভিযান তীব্রতর হয়েছে দেশটিতে। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ১০০ ছাড়িয়ে গেছে জঙ্গি হামলার সংখ্যা।