ঢাকা ১০:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

স্থিতিশীল মসলা বাজার, ভেঙেছে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ক্ষুদ্র ও মাঝারি আমদানিকারকরা সুযোগ পাওয়ায় দেশে ভোগ্যপণ্যের বাজারে ভেঙে গেছে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। যার সুফল মিলেছে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। কোরবানির আগে গেল বছরগুলোতে পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়লেও এবারে ভিন্ন চিত্র। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবাই আমদানির সুযোগ পাওয়া, আন্তর্জাতিক বাজারে পড়তি দাম ও পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে বাজারে স্বস্তি ফিরেছে, যার সুফল পাবেন ভোক্তারা।

দেশে আদার চাহিদা বছরে প্রায় তিন লাখ টন। উৎপাদন হয় অর্ধেকেরও কম। ফলে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ আদা আমদানি করতে হয়। এরমধ্যে ভারত আর চায়না থেকে বেশি আদা আসে বাংলাদেশে।

আদা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কোরবানির ঈদের মৌসুমে। এবারও খাতুনগঞ্জে প্রতিটি আড়তেই মসলা জাতীয় এই পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আর বছর ঘুরতেই পাল্টে গেছে চিত্রও। গেল বছর কোরবানির ঈদের সময় চায়না আদা ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। আর ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স সোয়েব ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে আমাদের বাজার অনেক পার্থক্য। আন্তর্জাতিক বাজারে আদা ১৪০ টাকা করে। আমরা বিক্রি করছি ১১৫ টাকা। কোরবানির কারণে পণ্য বেশি করায় লোকসান দিতে হচ্ছে, বাজার কম। মানে লাগবে ৫০ টন, চলে আসছে ১০০ টন। এটা বেশি হয়ে যাওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কাঁচামাল তো রাখা যাবে না।’

বছরে রসুনের চাহিদা প্রায় ছয় লাখ টন, একবছরের ব্যবধানে এই পণ্যেও মিলছে অনেকটা স্বস্তি। গেল বছর কোরবানির মৌসুমে ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া চায়না রসুন এখন কিনতে পারছেন ১১৫ টাকায়। আন্তর্জাতিক বাজারে রসুনের দাম পড়তির দিকে হওয়ায় বেকায়দায় আমদানিকারকরা।

গত বছরের সাথে তুলনা করলে অর্ধেকে নেমেছে পেঁয়াজের দামও। গেলবছর যেখানে পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা এখন তা ৪২ থেকে ৫৫ টাকা। আর চাহিদার প্রায় পুরোটাই পূরণ করছে দেশি পেঁয়াজ। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় দেশি পেঁয়াজেই এবার চাহিদা মিটবে, বলছেন ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স তৈয়্যব ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহিম বলেন, ‘আট থেকে দশদিন পর বেচাবিক্রির সময় থাকবে না। ওইটা গরু এবং অন্যান্য আইটেম নিয়ে চলে যাবে। এখান থেকে যারা বিভিন্নে জেলায়, মোকামে নিয়ে যাবে তারা এই সময়ে নিয়ে যাবে। এখন যখন হচ্ছে না, সামনে আর আশা করা যায় না। অতিরিক্ত যারা আমদানি করছে, সামনে সব পণ্য আসবে।’

খাতুনগঞ্জের বাজারে অন্যান্য মসলাতেও কমেছে দাম। ভারতীয় মরিচে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি মরিচ কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা কমেছে। হলুদ কমেছে কেজিতে ৩০ টাকা। আড়ৎদাররা বলছেন, সিন্ডিকেট ভেঙে এখন ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীরাও পণ্য আমদানির সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামও কমছে।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স আল মদিনা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আতাউল্লাহ জাহেদী বলেন, ‘মসলার ক্ষেত্রে এ বছর বাজার খুবই নিচের দিকে। মরিচ যেগুলো আমরা বিক্রি করতাম ৩০০টাকার উপরে। সেই মরিচগুলো এখন ২৩০ টাকা। আগে সিন্ডিকেটের মতো কিছু মানুষ আমদানি করতো। এখন যে চাচ্ছে সবাই আমদানি করতে পারছে।’

কোরবানির ঈদ ঘিরে খাতুনগঞ্জে কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

স্থিতিশীল মসলা বাজার, ভেঙেছে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য

আপডেট সময় : ০১:১২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

ক্ষুদ্র ও মাঝারি আমদানিকারকরা সুযোগ পাওয়ায় দেশে ভোগ্যপণ্যের বাজারে ভেঙে গেছে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। যার সুফল মিলেছে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। কোরবানির আগে গেল বছরগুলোতে পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়লেও এবারে ভিন্ন চিত্র। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবাই আমদানির সুযোগ পাওয়া, আন্তর্জাতিক বাজারে পড়তি দাম ও পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে বাজারে স্বস্তি ফিরেছে, যার সুফল পাবেন ভোক্তারা।

দেশে আদার চাহিদা বছরে প্রায় তিন লাখ টন। উৎপাদন হয় অর্ধেকেরও কম। ফলে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ আদা আমদানি করতে হয়। এরমধ্যে ভারত আর চায়না থেকে বেশি আদা আসে বাংলাদেশে।

আদা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কোরবানির ঈদের মৌসুমে। এবারও খাতুনগঞ্জে প্রতিটি আড়তেই মসলা জাতীয় এই পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আর বছর ঘুরতেই পাল্টে গেছে চিত্রও। গেল বছর কোরবানির ঈদের সময় চায়না আদা ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। আর ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স সোয়েব ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে আমাদের বাজার অনেক পার্থক্য। আন্তর্জাতিক বাজারে আদা ১৪০ টাকা করে। আমরা বিক্রি করছি ১১৫ টাকা। কোরবানির কারণে পণ্য বেশি করায় লোকসান দিতে হচ্ছে, বাজার কম। মানে লাগবে ৫০ টন, চলে আসছে ১০০ টন। এটা বেশি হয়ে যাওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কাঁচামাল তো রাখা যাবে না।’

বছরে রসুনের চাহিদা প্রায় ছয় লাখ টন, একবছরের ব্যবধানে এই পণ্যেও মিলছে অনেকটা স্বস্তি। গেল বছর কোরবানির মৌসুমে ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া চায়না রসুন এখন কিনতে পারছেন ১১৫ টাকায়। আন্তর্জাতিক বাজারে রসুনের দাম পড়তির দিকে হওয়ায় বেকায়দায় আমদানিকারকরা।

গত বছরের সাথে তুলনা করলে অর্ধেকে নেমেছে পেঁয়াজের দামও। গেলবছর যেখানে পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা এখন তা ৪২ থেকে ৫৫ টাকা। আর চাহিদার প্রায় পুরোটাই পূরণ করছে দেশি পেঁয়াজ। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় দেশি পেঁয়াজেই এবার চাহিদা মিটবে, বলছেন ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স তৈয়্যব ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহিম বলেন, ‘আট থেকে দশদিন পর বেচাবিক্রির সময় থাকবে না। ওইটা গরু এবং অন্যান্য আইটেম নিয়ে চলে যাবে। এখান থেকে যারা বিভিন্নে জেলায়, মোকামে নিয়ে যাবে তারা এই সময়ে নিয়ে যাবে। এখন যখন হচ্ছে না, সামনে আর আশা করা যায় না। অতিরিক্ত যারা আমদানি করছে, সামনে সব পণ্য আসবে।’

খাতুনগঞ্জের বাজারে অন্যান্য মসলাতেও কমেছে দাম। ভারতীয় মরিচে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি মরিচ কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা কমেছে। হলুদ কমেছে কেজিতে ৩০ টাকা। আড়ৎদাররা বলছেন, সিন্ডিকেট ভেঙে এখন ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীরাও পণ্য আমদানির সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামও কমছে।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স আল মদিনা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আতাউল্লাহ জাহেদী বলেন, ‘মসলার ক্ষেত্রে এ বছর বাজার খুবই নিচের দিকে। মরিচ যেগুলো আমরা বিক্রি করতাম ৩০০টাকার উপরে। সেই মরিচগুলো এখন ২৩০ টাকা। আগে সিন্ডিকেটের মতো কিছু মানুষ আমদানি করতো। এখন যে চাচ্ছে সবাই আমদানি করতে পারছে।’

কোরবানির ঈদ ঘিরে খাতুনগঞ্জে কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হয়।