ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সবজির বাজার স্থিতিশীল, কমেছে মুরগির দাম

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
  • / ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরবরাহ ভালো থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অনেকটাই আকাশছোঁয়া। এদিকে মাছের বাজারেও দামের উত্থান-পতনে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে একমাত্র স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠেছে মুরগির বাজার। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান বাজারে ব্রয়লার, সোনালি কিংবা দেশি সব ধরনের মুরগির দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় ভোক্তাদের বড় অংশ এখন মুরগিতেই নির্ভর করছেন। কেউ কেউ আবার বেশি করে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণও করছেন।

শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার,মিরপুর, তালতলা ও শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারগুলোতে বেগুন প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি কেজিতে ৫০ টাকা কমে ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, সাজনা ১০০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে শীতকালীন সবজি সিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, ফুলকপি ছোট ৪০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনেপাতা ২৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা, ইন্ডিয়ান ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা, নাজিরশাইল ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫ টাকা ও ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খাদেমুল ইসলাম বলেন, গত ঈদের পর থেকে যেমন সবজির দাম বাড়তি ছিল সেই তুলনায় সবজির বাজার কিছুটা কমেছে। এছাড়া কিছুদিন আগে যেসব সবজি ৭০-৮০ টাকার ঘরে ছিল, সেই সবজিগুলো এখন ৫০-৬০ টাকার ঘরে নেমেছে। সেই হিসেবে সবজির দাম এখন কিছুটা কম।

মগবাজার বাজারের আরেক ক্রেতা শহীদুজ্জামান বলেন, আজকে বাজারে দেখলাম সবজির মধ্যে সবচেয়ে দামি সবজি কাঁকরোল, যার প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এ ছাড়া টমেটোর দাম হঠাৎ করে বেড়ে এখন প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাকি সবজি গুলোর দাম তুলনামূলক কমেছে। সবজির দাম কমেছে বলতে যেটা প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হত সেটা আজকের বাজারে দেখলাম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম বিষয়ে মহাখালী বাজারের সবজি বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সবজির দাম কম যাচ্ছে। ক্রেতারা আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে সবজি কিনছে এখন। কিছুদিন আগেও সবজির দাম যখন বাড়তি যাচ্ছিল তখন ক্রেতারা খুব কম পরিমাণে সবজি কিনছিল। সেই তুলনায় সবজির দাম এখন কম হওয়ায় তুলনামূলক বেশি করে সবজি কিনতে পারছে। পাইকারি বাজারে যখন আমরা কম দামে সবজি কিনতে পারি, তখন কম দামি ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি করা যায়। এখন কম দাম চলছে বলেই, কে তাদের কাছে কম দামি বিক্রি করতে পারছি।

অন্যদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি ২২০ টাকা, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা হাসিবুর রহমান নামক এক ক্রেতা বলেন, ছেলে-মেয়েরা রুই মাছ খুব পছন্দ করে, কিন্তু এখন তো রুইও ৩৫০ টাকা! তেলাপিয়াতেই ফিরতি পথ খুঁজে নিতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতারাই দেখবেন কমদামি মাছের দোকানগুলোতেই ভিড় বেশি। এছাড়া তো কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাছে-ভাতে বড় হয়েছি, এখন মাছ কিনতে গেলে মাসের বাজেট উল্টে যায়। দেশে মাছের উৎপাদন বাড়লেও দাম কমছে না, বরং দিনে দিনে আরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন কথা হলো,দেশে এত মাছ চাষ হয়, তাও দাম কমে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস মিলছে ১,২৫০ টাকায় এবং ছাগলের মাংস ১,১০০ টাকা কেজি। এসব দামে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। অনেকে বাজারে এসে গরুর মাংসের দোকান ঘুরে শেষ পর্যন্ত ফিরে যাচ্ছেন মুরগির দিকে।

আজকের বাজারে একটু স্বস্তিজনক অবস্থা বিরাজ করছে মুরগির মাংসে। আজকের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০–২৬০ টাকা, সাদা ও লাল লেয়ার ২৫০–২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০–৬০০ টাকা এবং হাঁস প্রতি পিস ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাকরিজীবী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, খুচরা বিক্রেতারা একসময় কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করলেও এখন ‘সিন্ডিকেটের চাপে’ পেছিয়ে গেছেন। আর খুচরা বিক্রেতারা দায় দিচ্ছেন পাইকারদের কাঁধে।

তিনি বলেন, এক কেজি গরুর মাংস নিয়েছি ৮০০ টাকায়। দাম কিছুটা বেশিই মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। কিছুদিন পরই ঈদ আসছে, জানি না দাম এখানেই থাকে, নাকি আরও বেড়ে যায়।

রফিকুল ইসলাম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে মুরগির দাম এখনও সহনীয়। গরুর মাংসের দিকে তাকাতেও পারি না। তাই একটু বেশি করে মুরগির মাংস কিনে নিয়েছি। আমার মতো আরও অনেকেই নিচ্ছে। বলা তো যায় না, ঈদ উপলক্ষ্যে হয়ত আবারও দাম বেড়ে যাবে।

এদিকে খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়া-কমার পেছনে তাদের কোনো অবদান নেই। পাইকারি বাজার থেকে কমে কিনতে পারলে কমেই বিক্রি সম্ভব, যার প্রমাণ ব্রয়লার মুরগি।

নিউজটি শেয়ার করুন

সবজির বাজার স্থিতিশীল, কমেছে মুরগির দাম

আপডেট সময় : ১২:৫০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

সরবরাহ ভালো থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অনেকটাই আকাশছোঁয়া। এদিকে মাছের বাজারেও দামের উত্থান-পতনে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে একমাত্র স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠেছে মুরগির বাজার। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান বাজারে ব্রয়লার, সোনালি কিংবা দেশি সব ধরনের মুরগির দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় ভোক্তাদের বড় অংশ এখন মুরগিতেই নির্ভর করছেন। কেউ কেউ আবার বেশি করে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণও করছেন।

শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার,মিরপুর, তালতলা ও শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারগুলোতে বেগুন প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি কেজিতে ৫০ টাকা কমে ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, সাজনা ১০০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে শীতকালীন সবজি সিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, ফুলকপি ছোট ৪০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনেপাতা ২৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা, ইন্ডিয়ান ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা, নাজিরশাইল ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫ টাকা ও ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খাদেমুল ইসলাম বলেন, গত ঈদের পর থেকে যেমন সবজির দাম বাড়তি ছিল সেই তুলনায় সবজির বাজার কিছুটা কমেছে। এছাড়া কিছুদিন আগে যেসব সবজি ৭০-৮০ টাকার ঘরে ছিল, সেই সবজিগুলো এখন ৫০-৬০ টাকার ঘরে নেমেছে। সেই হিসেবে সবজির দাম এখন কিছুটা কম।

মগবাজার বাজারের আরেক ক্রেতা শহীদুজ্জামান বলেন, আজকে বাজারে দেখলাম সবজির মধ্যে সবচেয়ে দামি সবজি কাঁকরোল, যার প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এ ছাড়া টমেটোর দাম হঠাৎ করে বেড়ে এখন প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাকি সবজি গুলোর দাম তুলনামূলক কমেছে। সবজির দাম কমেছে বলতে যেটা প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হত সেটা আজকের বাজারে দেখলাম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম বিষয়ে মহাখালী বাজারের সবজি বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সবজির দাম কম যাচ্ছে। ক্রেতারা আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে সবজি কিনছে এখন। কিছুদিন আগেও সবজির দাম যখন বাড়তি যাচ্ছিল তখন ক্রেতারা খুব কম পরিমাণে সবজি কিনছিল। সেই তুলনায় সবজির দাম এখন কম হওয়ায় তুলনামূলক বেশি করে সবজি কিনতে পারছে। পাইকারি বাজারে যখন আমরা কম দামে সবজি কিনতে পারি, তখন কম দামি ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি করা যায়। এখন কম দাম চলছে বলেই, কে তাদের কাছে কম দামি বিক্রি করতে পারছি।

অন্যদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি ২২০ টাকা, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা হাসিবুর রহমান নামক এক ক্রেতা বলেন, ছেলে-মেয়েরা রুই মাছ খুব পছন্দ করে, কিন্তু এখন তো রুইও ৩৫০ টাকা! তেলাপিয়াতেই ফিরতি পথ খুঁজে নিতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতারাই দেখবেন কমদামি মাছের দোকানগুলোতেই ভিড় বেশি। এছাড়া তো কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাছে-ভাতে বড় হয়েছি, এখন মাছ কিনতে গেলে মাসের বাজেট উল্টে যায়। দেশে মাছের উৎপাদন বাড়লেও দাম কমছে না, বরং দিনে দিনে আরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন কথা হলো,দেশে এত মাছ চাষ হয়, তাও দাম কমে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস মিলছে ১,২৫০ টাকায় এবং ছাগলের মাংস ১,১০০ টাকা কেজি। এসব দামে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। অনেকে বাজারে এসে গরুর মাংসের দোকান ঘুরে শেষ পর্যন্ত ফিরে যাচ্ছেন মুরগির দিকে।

আজকের বাজারে একটু স্বস্তিজনক অবস্থা বিরাজ করছে মুরগির মাংসে। আজকের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০–২৬০ টাকা, সাদা ও লাল লেয়ার ২৫০–২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০–৬০০ টাকা এবং হাঁস প্রতি পিস ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাকরিজীবী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, খুচরা বিক্রেতারা একসময় কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করলেও এখন ‘সিন্ডিকেটের চাপে’ পেছিয়ে গেছেন। আর খুচরা বিক্রেতারা দায় দিচ্ছেন পাইকারদের কাঁধে।

তিনি বলেন, এক কেজি গরুর মাংস নিয়েছি ৮০০ টাকায়। দাম কিছুটা বেশিই মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। কিছুদিন পরই ঈদ আসছে, জানি না দাম এখানেই থাকে, নাকি আরও বেড়ে যায়।

রফিকুল ইসলাম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে মুরগির দাম এখনও সহনীয়। গরুর মাংসের দিকে তাকাতেও পারি না। তাই একটু বেশি করে মুরগির মাংস কিনে নিয়েছি। আমার মতো আরও অনেকেই নিচ্ছে। বলা তো যায় না, ঈদ উপলক্ষ্যে হয়ত আবারও দাম বেড়ে যাবে।

এদিকে খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়া-কমার পেছনে তাদের কোনো অবদান নেই। পাইকারি বাজার থেকে কমে কিনতে পারলে কমেই বিক্রি সম্ভব, যার প্রমাণ ব্রয়লার মুরগি।