তিন স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ইসরাইলে ঢুকছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র

- আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে

তিনস্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সত্ত্বেও ইরানের হামলা ঠেকাতে বেগ পেতে হচ্ছে ইসরাইলকে। কোটি কোটি ডলার ব্যয়ের পরেও বাঁচানো যাচ্ছে না ইসরাইলিদের প্রাণ। বিশ্লেষকদের দাবি, সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে চাপ পড়তে পারে তেল আবিবের অর্থনীতিতে।
ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইলের সামনে ব্যর্থ হচ্ছে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত আকাশ নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে তাণ্ডব চালাচ্ছে তেহরানের মিসাইল। যার চিত্র ভেসে বেড়াচ্ছে পত্রিকা, টেলিভিশন ও মোবাইল স্ক্রিনে।
১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকেই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে কাজ শুরু করে ইসরাইল। যাতে নানাভাবে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলস্বরূপ কয়েক স্তরের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনে সক্ষম হয়েছে তেল আবিব।
স্বল্পপাল্লার আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা হয় আয়রন ডোম। ২০১১ সাল থেকে অপারেট করা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি ৪ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরত্বের রকেট, ড্রোন ও মিসাইল ঠেকাতে সক্ষম। যদিও একসঙ্গে বড় হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে অকার্যকর এটি। এছাড়াও শনাক্ত করার মধ্যেই আয়রন ডোমের সুরক্ষা ভেদ করতে সক্ষম অ্যান্টিট্যাংক গাইড মিসাইল ও শর্ট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় পাওয়া গেছে এর প্রমাণ।
ইসরাইলি ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. যিহোশুহা কালিস্কি বলেন, ‘এটিএম, করনেট কিংবা বুরকানের হামলা ঠেকাতে এটি তেমন কার্যকর নয়। কারণ সিস্টেমটি হামলাকে শনাক্ত করতে সময় নেয় এবং সে অনুযায়ী কাজ করে। এগুলোর জন্য আয়রন ডোম পর্যাপ্ত সময় পায় না।’
যদিও এই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছে ডেভিডস স্লিং। মাঝারি পাল্লার এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে আসা ব্যালিস্টিক মিসাইল, ক্রুজ মিসাইল, ড্রোন ও বিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম।
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলার জন্য ইসরাইল গড়ে তুলেছে অ্যারো-২ ও অ্যারো-৩ সিস্টেম। অ্যারো-২ মিসাইলকে বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ধ্বংস করে। অন্যদিকে অ্যারো-৩ কাজ করে বায়ুমণ্ডলের বাইরে, অর্থাৎ মহাকাশ স্তরে। যেখানে পারমাণবিক বা রাসায়নিক ওয়ারহেড যুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র নিরাপদে ধ্বংস করা যায়। তবে স্বল্পমূল্যের ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট ও ড্রোনকে ঠেকাতে ডিফেন্স সিস্টেমের পেছনে খরচ করতে হয় কোটি কোটি ডলার।
ড. যিহোশুহা কালিস্কি বলেন, ‘আমরা স্বল্পমূল্যে সিস্টেম তৈরি করতে চেয়েছিলাম। কারণ আমাদের এগুলো বিপুল সংখ্যায় প্রয়োজন ছিল। তবে এ কারণে সফলতার হার ১০০% এর নিচে নেমে যায়। অনেক সময় এটি ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সফল হিসেবে কাজ করে।’
ইরান-ইসরাইলের মধ্যে কতদিন ধরে এই সংঘাত চলবে, তার কোনো পূর্বাভাস দিতে পারছেন না বিশ্লেষকরা। তবে তাদের দাবি, সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে চাপ পড়তে পারে তেল আবিবের অর্থনীতি।