দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরানে হামলা চালানো হবে কিনা, সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প

- আপডেট সময় : ০১:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
- / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের ওপর হামলা চালানো হবে কি না সে বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বা নাও হতে পারে, এমন আলোচনার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, আমি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।
ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রচারণায় যোগ দেওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে ট্রাম্প তার রিপাবলিকান ঘাঁটির মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধের মুখোমুখি হওয়ার পরে এই ঘোষণাটি আসে। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব টাকার কার্লসন, ট্রাম্পের কৌশলবিদ স্টিভ ব্যানন, সিনেটর র ্যান্ড পল এবং রিপাবলিকান প্রতিনিধি মার্জোরি টেইলর গ্রিনসহ বিশিষ্ট কণ্ঠগুলো প্রেসিডেন্টের সরাসরি সামরিক পদক্ষেপে জড়িত হওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।
অনেকে সমালোচনা করেছেন যে সরাসরি জড়িত হওয়ার ফলে ট্রাম্প আরও একটি ব্যয়বহুল বিদেশী হস্তক্ষেপে জড়িয়ে পড়বেন, যার বিরুদ্ধে তিনি রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার সময় সোচ্চারভাবে প্রচার করেছিলেন।
তারপরও সিনেটর টেড ক্রুজ ও লিন্ডসে গ্রাহামসহ ঐতিহ্যবাহী রিপাবলিকানরা সামরিক পদক্ষেপের জন্য চাপ দিচ্ছেন।
হোয়াইট হাউস বলেছে, ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে তা নিশ্চিত করাই ট্রাম্পের অগ্রাধিকার।
তিনি বলেন, ‘ইরান একেবারেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না, প্রেসিডেন্টের এমন অবস্থানে কারো বিস্মিত হওয়া উচিত নয়। কয়েক দশক ধরে তিনি এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে স্পষ্ট ছিলেন,” হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন লেভিট। এ কারণেই তিনি কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তিনি খুব স্পষ্ট করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র অর্জনের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবই ইরানের রয়েছে, তাদের শুধু সর্বোচ্চ নেতার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এই অস্ত্রের উৎপাদন শেষ করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। তিনি বলেন, এটি করা হলে তা কেবল ইসরায়েলের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও পুরো বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি বিষয় যার সঙ্গে রাশিয়ার মতো দেশসহ গোটা বিশ্ব একমত যে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করা উচিত নয় এবং তারা পাবে না।
ইরান পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টার কথা অস্বীকার করেছে।
গত শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করার পর ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এ বিষয়ে কথা বলেছেন বলে লিভিট এর আগে নিশ্চিত করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানিদের মধ্যে চিঠিপত্রের বিষয়ে আমি নিশ্চিত করতে পারি যে চিঠিপত্র অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমরা তাদের সঙ্গে পরোক্ষ ও পরোক্ষ উভয় উপায়ে ছয় দফা আলোচনা করেছি।
এপ্রিলে আলোচনা শুরু হয়েছিল এবং গত রোববারও তা অব্যাহত থাকার কথা ছিল, কিন্তু ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক স্থাপনা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আক্রমণ তেহরানকে বৈঠক বাতিল করতে এবং পাল্টা হামলা চালাতে প্ররোচিত করেছিল।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরপর থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। ইরানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯ জন নিহত ও ১৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ট্রাম্পের দুই সপ্তাহের সময়সীমা এমন এক সময় এলো যখন জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানের জন্য চলতি সপ্তাহে ইরানি প্রতিপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন।
জার্মান কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে ডিপিএ জানিয়েছে, শুক্রবার জেনেভায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা। এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।
লিভিট বলেছিলেন যে তিনি “মিঃ উইটকফের ভ্রমণের সময়সূচীতে এটি ট্র্যাক করছেন না, তবে আমি অবশ্যই নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার সাথে চেক ইন করতে পারি। সুত্র : আনাদোলু এজেন্সি