ঢাকা ০৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইরান নিয়ে দ্বন্দ্বে ট্রাম্প-তুলসী গ্যাবার্ড

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৩১:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (ডিএনআই) তুলসী গ্যাবার্ড সম্পর্ক এক অস্বস্তিকর মোড়ে পৌঁছেছে। পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে গ্যাবার্ডের দেওয়া একটি ভিডিওবার্তা ঘিরেই শুরু হয় এই উত্তেজনা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহ আগে গ্যাবার্ড জাপানের হিরোশিমায় তাঁর সফরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। ভিডিওতে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ভয়াবহতা তুলে ধরেন এবং বলেন, ‘আজ আমরা পারমাণবিক ধ্বংসের আরও কাছাকাছি অবস্থানে আছি। রাজনৈতিক অভিজাত ও যুদ্ধপিপাসুরা নিষ্ঠুরভাবে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয় , ট্রাম্প ওই ভিডিওতে ক্ষুব্ধ হন এবং গ্যাবার্ড তিরস্কার করে বলেন—এভাবে মানুষের মধ্যে ভয় ছড়ানো উচিত নয়। প্রেসিডেন্টের মতে, এমন বিষয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে আলোচনা করা উচিত নয়।

গ্যাবার্ড উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট ও তাঁর উপদেষ্টাদের একাংশ শুরু থেকেই সন্দেহ করছিলেন যে, গ্যাবার্ডের বিদেশ সফর মূলত তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নির্মাণের অংশ।

একজন ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্প সরাসরি গ্যাবার্ডকে বলেছেন, ‘তুমি যদি প্রেসিডেন্ট হতে চাও, তাহলে আমার প্রশাসনে তোমার থাকা উচিত নয়।’

ইরান ইস্যুতে মতভেদ প্রকাশ্যে

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে হোয়াইট হাউসে যখন সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনা করা হচ্ছে, তখন গ্যাবার্ড সতর্কবার্তা দেন—এ ধরনের পদক্ষেপ একটি বিস্তৃত যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

গ্যাবার্ড এর আগেও বলেছিলেন, ইরান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়নি। তা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি তা বিশ্বাস করি না। ওরা প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।’

এই মন্তব্য অনেকের কাছে গ্যাবার্ডের অবস্থানকে প্রকাশ্যে খণ্ডন করার শামিল বলেই মনে হয়েছে।

গ্যাবার্ডের অবস্থান দুর্বল, তবুও প্রশাসনে আছেন
হোয়াইট হাউসের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে এবং বর্তমানে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে।

গ্যাবার্ড নিয়মিত প্রেসিডেন্টের ব্রিফিংয়ে অংশ নেন এবং সিআইএ পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন।

এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্যাবার্ড ইতোমধ্যেই জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের আকার ২৫ শতাংশ কমিয়েছেন এবং দপ্তরটি বিলুপ্ত করে সিআইএর অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি এরইমধ্যে বলেছেন, ‘আমি শেষ গোয়েন্দা পরিচালক হতে পারি।’

পররাষ্ট্র বিষয়ে অনাগ্রহী ও রক্ষণশীল নীতির প্রবক্তা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সসহ কিছু প্রভাবশালী নেতা গ্যাবার্ডের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে ভ্যান্স বলেন, ‘গ্যাবার্ড একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক।’

গ্যাবার্ডের মুখপাত্র অলিভিয়া কোলম্যান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং কিছু বিরক্তিকর, অপ্রাসঙ্গিক উৎসের কল্পিত গালগল্প। তুলসী গ্যাবার্ড তাঁর দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেছেন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরান নিয়ে দ্বন্দ্বে ট্রাম্প-তুলসী গ্যাবার্ড

আপডেট সময় : ১২:৩১:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (ডিএনআই) তুলসী গ্যাবার্ড সম্পর্ক এক অস্বস্তিকর মোড়ে পৌঁছেছে। পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে গ্যাবার্ডের দেওয়া একটি ভিডিওবার্তা ঘিরেই শুরু হয় এই উত্তেজনা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহ আগে গ্যাবার্ড জাপানের হিরোশিমায় তাঁর সফরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। ভিডিওতে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ভয়াবহতা তুলে ধরেন এবং বলেন, ‘আজ আমরা পারমাণবিক ধ্বংসের আরও কাছাকাছি অবস্থানে আছি। রাজনৈতিক অভিজাত ও যুদ্ধপিপাসুরা নিষ্ঠুরভাবে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয় , ট্রাম্প ওই ভিডিওতে ক্ষুব্ধ হন এবং গ্যাবার্ড তিরস্কার করে বলেন—এভাবে মানুষের মধ্যে ভয় ছড়ানো উচিত নয়। প্রেসিডেন্টের মতে, এমন বিষয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে আলোচনা করা উচিত নয়।

গ্যাবার্ড উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট ও তাঁর উপদেষ্টাদের একাংশ শুরু থেকেই সন্দেহ করছিলেন যে, গ্যাবার্ডের বিদেশ সফর মূলত তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নির্মাণের অংশ।

একজন ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্প সরাসরি গ্যাবার্ডকে বলেছেন, ‘তুমি যদি প্রেসিডেন্ট হতে চাও, তাহলে আমার প্রশাসনে তোমার থাকা উচিত নয়।’

ইরান ইস্যুতে মতভেদ প্রকাশ্যে

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে হোয়াইট হাউসে যখন সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনা করা হচ্ছে, তখন গ্যাবার্ড সতর্কবার্তা দেন—এ ধরনের পদক্ষেপ একটি বিস্তৃত যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

গ্যাবার্ড এর আগেও বলেছিলেন, ইরান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়নি। তা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি তা বিশ্বাস করি না। ওরা প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।’

এই মন্তব্য অনেকের কাছে গ্যাবার্ডের অবস্থানকে প্রকাশ্যে খণ্ডন করার শামিল বলেই মনে হয়েছে।

গ্যাবার্ডের অবস্থান দুর্বল, তবুও প্রশাসনে আছেন
হোয়াইট হাউসের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে এবং বর্তমানে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে।

গ্যাবার্ড নিয়মিত প্রেসিডেন্টের ব্রিফিংয়ে অংশ নেন এবং সিআইএ পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন।

এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্যাবার্ড ইতোমধ্যেই জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের আকার ২৫ শতাংশ কমিয়েছেন এবং দপ্তরটি বিলুপ্ত করে সিআইএর অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি এরইমধ্যে বলেছেন, ‘আমি শেষ গোয়েন্দা পরিচালক হতে পারি।’

পররাষ্ট্র বিষয়ে অনাগ্রহী ও রক্ষণশীল নীতির প্রবক্তা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সসহ কিছু প্রভাবশালী নেতা গ্যাবার্ডের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে ভ্যান্স বলেন, ‘গ্যাবার্ড একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক।’

গ্যাবার্ডের মুখপাত্র অলিভিয়া কোলম্যান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং কিছু বিরক্তিকর, অপ্রাসঙ্গিক উৎসের কল্পিত গালগল্প। তুলসী গ্যাবার্ড তাঁর দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেছেন।’