ঢাকা ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল!

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:১৪:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • / ৩৫২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচন পরিচালনায় বিতর্কিতরা প্রশাসনে এখনো বহাল রয়েছে। তারা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। সেই সঙ্গে বর্তমান কমিশনের নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা না থাকায় ভরসা করতে পারছে না কয়েকটি দল। এদিকে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়েই এখনও ঐকমত্যে পৌঁছুতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলাপ যখন ২০২৬ এর এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারিতে, তখন ইসির সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।

এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই গত সাত মাসে দেশের ইতিহাসে সেরা নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি সাবেক সিইসিরা যখন আদালতের কাঠগড়ায় তখন পুরাতন কাঠামোতে গঠিত বর্তমান ইসির কার্যক্রম নিয়ে রয়েছে নানা মত।

এমন প্রেক্ষাপটে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর কতটা আস্থা রয়েছে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর? বিএনপি আস্থার কথা জানালেও মাঝামাঝি অবস্থানে জামায়াতে ইসলামী। আর ভরসা করতে পারছে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

এনসিপি সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘যে আইনের মাধ্যমে কমিশন গঠন করা হয়েছে সেটা নিরপেক্ষ হয়নি।’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ এবং জাতির কাছে যে অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা কীভাবে বাস্তবায়ন করে এটা এখন দেখার বিষয়।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপর আমাদের আস্থা আছে। এদের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা আশা করি তারা জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হবেন।’

এদিকে প্রশাসনে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়ে শঙ্কা রয়েছে দলগুলোর। তাদের সরানো না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন হবে বলে মনে করেন তারা।

আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হলো। সেই মামলায় ইশরাক হোসেন রায় পেয়ে গেলো কিন্তু সেই মামলায় বিরুদ্ধে মানে ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে আইনজীবীই নিয়োগ করেনি। পুরো প্রশাসন, যে প্রশাসন দিয়ে রাতে ভোট হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের যে অফিসারগুলো দিয়ে রাতের ভোট হয়েছে, ডামি ভোট হয়েছে, এক তরফা ভোট হয়েছে তারা কিন্তু সবাই স্ব স্ব জায়গায় আছে।’

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘যে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল, একটা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এখন আমি সাপ মারলাম কিন্তু সাপের লেজ রয়ে গেলো, তাহলে আবার কিন্তু ছোবল মারতে পারে।’

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই প্রশাসনে এখন পর্যন্ত সেই শেখ হাসিনার দোসররাই রয়ে গিয়েছে। এদেরকে এই সরকার সরাতে পারেনি বা ইচ্ছা করে সরায়নি। সুতরাং প্রশাসনে আমূল পরিবর্তন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’

এমন প্রেক্ষাপটে ইসির সচেতনতা বেশি জরুরি বলে মনে করছেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। জানান, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসহ প্রশাসনের কাজে গতি আনতে আগে সীমিত পরিসরে স্থানীয় নির্বাচন করা যেতে পারে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আগামী দিনে নির্বাচন কমিশনের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে আস্থা অর্জন করা। আস্থার সংকট যদি থেকে যায় তাহলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। আমি তো মনে করি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব। যদি নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, নির্বাচন কমিশনের ভুল করার কোনো সুযোগ নেই। তারা ভুল করলে এর পরিণতি কিন্তু ভয়াবহ হতে পারে।’

নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেন সিইসি। সেখানে থেকে কি নির্দেশনা পেলো কমিশন প্রধান সে আলোচনা সর্বমহলে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল!

আপডেট সময় : ০৫:১৪:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচন পরিচালনায় বিতর্কিতরা প্রশাসনে এখনো বহাল রয়েছে। তারা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। সেই সঙ্গে বর্তমান কমিশনের নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা না থাকায় ভরসা করতে পারছে না কয়েকটি দল। এদিকে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়েই এখনও ঐকমত্যে পৌঁছুতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলাপ যখন ২০২৬ এর এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারিতে, তখন ইসির সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।

এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই গত সাত মাসে দেশের ইতিহাসে সেরা নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি সাবেক সিইসিরা যখন আদালতের কাঠগড়ায় তখন পুরাতন কাঠামোতে গঠিত বর্তমান ইসির কার্যক্রম নিয়ে রয়েছে নানা মত।

এমন প্রেক্ষাপটে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর কতটা আস্থা রয়েছে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর? বিএনপি আস্থার কথা জানালেও মাঝামাঝি অবস্থানে জামায়াতে ইসলামী। আর ভরসা করতে পারছে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

এনসিপি সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘যে আইনের মাধ্যমে কমিশন গঠন করা হয়েছে সেটা নিরপেক্ষ হয়নি।’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ এবং জাতির কাছে যে অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা কীভাবে বাস্তবায়ন করে এটা এখন দেখার বিষয়।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপর আমাদের আস্থা আছে। এদের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা আশা করি তারা জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হবেন।’

এদিকে প্রশাসনে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়ে শঙ্কা রয়েছে দলগুলোর। তাদের সরানো না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন হবে বলে মনে করেন তারা।

আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হলো। সেই মামলায় ইশরাক হোসেন রায় পেয়ে গেলো কিন্তু সেই মামলায় বিরুদ্ধে মানে ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে আইনজীবীই নিয়োগ করেনি। পুরো প্রশাসন, যে প্রশাসন দিয়ে রাতে ভোট হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের যে অফিসারগুলো দিয়ে রাতের ভোট হয়েছে, ডামি ভোট হয়েছে, এক তরফা ভোট হয়েছে তারা কিন্তু সবাই স্ব স্ব জায়গায় আছে।’

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘যে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল, একটা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এখন আমি সাপ মারলাম কিন্তু সাপের লেজ রয়ে গেলো, তাহলে আবার কিন্তু ছোবল মারতে পারে।’

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই প্রশাসনে এখন পর্যন্ত সেই শেখ হাসিনার দোসররাই রয়ে গিয়েছে। এদেরকে এই সরকার সরাতে পারেনি বা ইচ্ছা করে সরায়নি। সুতরাং প্রশাসনে আমূল পরিবর্তন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’

এমন প্রেক্ষাপটে ইসির সচেতনতা বেশি জরুরি বলে মনে করছেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। জানান, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসহ প্রশাসনের কাজে গতি আনতে আগে সীমিত পরিসরে স্থানীয় নির্বাচন করা যেতে পারে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আগামী দিনে নির্বাচন কমিশনের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে আস্থা অর্জন করা। আস্থার সংকট যদি থেকে যায় তাহলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। আমি তো মনে করি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব। যদি নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, নির্বাচন কমিশনের ভুল করার কোনো সুযোগ নেই। তারা ভুল করলে এর পরিণতি কিন্তু ভয়াবহ হতে পারে।’

নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেন সিইসি। সেখানে থেকে কি নির্দেশনা পেলো কমিশন প্রধান সে আলোচনা সর্বমহলে।