ভয়াবহ বৃষ্টি-বন্যায় ভারতের হিমাচলে গেলো ক’দিনে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩৯ জনের। জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। বন্ধ ১২৯টি সড়ক ও রাজ্যের সব স্কুল। শিমলায় ধসে পড়েছে পাঁচতলা ভবন। বন্যার তাণ্ডব চলছে চীনে। অন্যদিকে, তাপমাত্রার পারদ ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে স্পেনে। তীব্র দাবদাহের কবলে ইউরোপের বড় অংশ।

পাহাড়ি ঢল, বন্যা কিংবা ভূমিধ্বস। কী বলা যায় একে? প্রকৃতির বিধ্বংসী এ রূপ হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা এলাকার। বর্ষার শুরু থেকেই, প্রায় ১০ দিন ধরে বৃষ্টি, বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যটি। আরও ভারি বৃষ্টির আভাস ভারতের আবহাওয়া বিভাগের।

১২ জেলার মধ্যে রোববার থেকে চার জেলায় জারি সর্বোচ্চ আবহাওয়া সতর্কতা রেড অ্যালার্ট এবং ছয় জেলায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা অরেঞ্জ অ্যালার্ট।

তীব্র বৃষ্টিতে শিমলায় ধসে পড়েছে পাঁচতলা ভবন। সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানাভাবে প্রাণহানি চলছেই। শিমলা-চণ্ডীগড় সংযোগ মহাসড়কে ভূমিধ্বসের পর, পূর্বসতর্কতা হিসেবে রাজ্যের ১২৯টি সড়কে যান চলাচল বন্ধ। দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্যের সব স্কুলও। ৫ জুলাই পর্যন্ত ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকার আভাস পুরো রাজ্যে। বিশেষ করে সোমবার বৃষ্টি আরও বাড়বে বলে জারি করা হয়েছে বন্যা সতর্কতাও।

তীব্র বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত প্রতিবেশী চীনের দক্ষিণ আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলও। অতিবৃষ্টিতে গুইঝৌ প্রদেশের দুলিউ নদীতে ২৫৩ মিটার পার করার পর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি মানুষের। সেকেন্ডে আট হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হতে থাকার মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৪২ হাজার মানুষকে।

প্রদেশটিতে ত্রাণ সহায়তার জন্য চীনা মুদ্রায় ২০ কোটি ইউয়ান অর্থবরাদ্দ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বজ্রসহ ঝড়, ভারি বৃষ্টির কবলে সিচুয়ান প্রদেশের ১৬টি শহর। সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৫৭টি এলাকার ৩০ হাজার বাসিন্দাকে।

অন্যদিকে ভিন্ন চিত্র ইউরোপে। তীব্র গরমে সতর্কতা জারি রয়েছে বরফের স্বর্গ খ্যাত সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বসনিয়া, হাঙ্গেরি, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়াসহ ইউরোপের বড় অংশে। গ্রীষ্মের খরতাপে আবহাওয়ার মানচিত্রে লাল রঙ ধারণ করেছে পর্তুগাল, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া। তাপমাত্রার পারদ ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে স্পেনে।

এক অধিবাসী বলেন, ‘সূর্য এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছি। যতটা সম্ভব ছায়ার মধ্যে থাকছি। অনেক পানি পান করছি।’

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ ডিগ্রি বেশি। জার্মানিতেও ৩০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। আসন্ন দাবদাহে দেশটিতে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে জার্মান আবহাওয়া বিভাগ।