ফেনীতে পানি নামছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষাধিক মানুষ

- আপডেট সময় : ০৬:৪৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে

নতুন করে বর্ষণ ও উজানের ঢলের চাপ না থাকায় ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির দিকে। এরইমধ্যে নামতে শুরু করেছে বানের পানি। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বানভাসি মানুষ। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকায় ফুটে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। তবে, বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে সদরসহ ৩ উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় আবারও দেখা দিয়েছে প্লাবন।
বানের পানির তোড়ে টিকতে না পেরে ফেনীর ফুলগাজীর শ্রীপুর গ্রামের দুই গৃহিণী ঘরদোর ফেলে আশ্রয় নেন নিরাপদ স্থানে। তিন দিন পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরেছেন বাড়িতে। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখতে পান, তিলে তিলে সাজানো সংসার তছনছ হয়ে গেছে। কোনোরকমে ঘরটা টিকে থাকলেও রক্ষা হয়নি গৃহস্থালির সামগ্রী।
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামের বেশিরভাগ স্থানে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘একটা প্লেটও নাই ঘরে। সবকিছু ভেসে গেছে। সব শেষ। পানির জন্য ঘরেও থাকা যায় না।’
এদিকে মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২২টি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। এতে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া ও দাগনভূঞাঁ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, ‘ওয়াটার লেভেল নিচে নেমে গেছে, নদীতে পানি নেই। যেসব ভাঙা অংশ চিহ্নিত করেছি, লোকালয়ের পানি নামলেই দ্রুত কাজ শুরু করবো।’
বছর না ঘুরতেই ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে সৃষ্টি হওয়া বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে আউশের বীজতলা, ক্ষতির মুখে পড়েছে সবজিখেত ও পোল্ট্রি খাত। বানের পানিতে ভেসে গেছে প্রায় ১ হাজার পুকুরের প্রায় ৫ কোটি টাকার মাছ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৭ শ’ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল। ক্ষতি হয়েছে সড়কসহ নানা অবকাঠামোরও।
প্রতিবছর এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পেতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।