ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিএনপির ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪২৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হরতালের পর এবার আগামী মঙ্গলবার থেকে থেকে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। রোববার দলটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। আগামী মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এদিকে, রোববার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথে এই সর্বাত্মক অবরোধ পালন করা হবে।’

গত শনিবার নয়াপল্টনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন প্রায় অর্ধশত। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স ও রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে।

এ সময় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপরও হামলা করা হয়। ভাঙচুর করা হয় গণমাধ্যমের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল।

এরপর সন্ধ্যায় সমাবেশে পুলিশি হামলার অভিযোগ এনে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করে বিএনপি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে ১৫ বছর। এই সময়ের মধ্যে নানা ইস্যুতে হরতাল করেছে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী হন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৯ সালের শুরুতে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগকে বিরোধীদলের প্রথম হরতালের মুখোমুখী হতে হয়েছিল ২০১০ সালের ২৭ জুন। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সমস্যার সমাধান, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হয়রানি নির্যাতন বন্ধ, বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ ও প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে এই হরতালের কর্মসূচি দিয়েছিল দলটি।

এরপর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল সর্বশেষ হরতাল–অবরোধ পালন করে বিএনপি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এরপর আর এই দাবিতে হরতালের মতো কর্মসূচিতে যায়নি বিএনপি। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হলেও এ ধরনের ধ্বংসাত্বক আর কোনো কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি। তবে ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ঢাকায় সকাল–সন্ধ্যা হরতাল পালন করে দলটি।

২০১০ সালে বিএনপি দুই দিন হরতাল করেছিল। ২৭ জুনের পর ওই একই দাবিতে ৩০ নভেম্বর হরতাল পালন করে দলটি।

সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পরিকল্পনা করছে এমন অভিযোগ এনে ২০১১ সালে ৫ জুন একদিন হরতাল করেছিল বিএনপি। এরপর ওই বছরের সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হলে হরতাল কর্মসূচি পালন করতে থাকে দলটি। তবে ২০১২ সালের বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর মৃত্যুর পর টানা হরতাল পালন করে দলটি। ২০১৩ সালের শেষ দিকে অর্থাৎ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে টানা হরতাল করে বিএনপি। সেই হরতাল শেষ হয় ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি এসে।

এরপর এক বছর বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার সময় দেয়। ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে টানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত হরতার–অবরোধের কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। অর্থাৎ টানা ৯৩ দিন ছিল এই কর্মসূচি। এরপর এই ইস্যুতে আর বিএনপি হরতাল–অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিএনপির ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা

আপডেট সময় : ০২:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৩

হরতালের পর এবার আগামী মঙ্গলবার থেকে থেকে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। রোববার দলটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। আগামী মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এদিকে, রোববার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথে এই সর্বাত্মক অবরোধ পালন করা হবে।’

গত শনিবার নয়াপল্টনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন প্রায় অর্ধশত। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স ও রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে।

এ সময় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপরও হামলা করা হয়। ভাঙচুর করা হয় গণমাধ্যমের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল।

এরপর সন্ধ্যায় সমাবেশে পুলিশি হামলার অভিযোগ এনে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করে বিএনপি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে ১৫ বছর। এই সময়ের মধ্যে নানা ইস্যুতে হরতাল করেছে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী হন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৯ সালের শুরুতে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগকে বিরোধীদলের প্রথম হরতালের মুখোমুখী হতে হয়েছিল ২০১০ সালের ২৭ জুন। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সমস্যার সমাধান, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হয়রানি নির্যাতন বন্ধ, বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ ও প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে এই হরতালের কর্মসূচি দিয়েছিল দলটি।

এরপর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল সর্বশেষ হরতাল–অবরোধ পালন করে বিএনপি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এরপর আর এই দাবিতে হরতালের মতো কর্মসূচিতে যায়নি বিএনপি। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হলেও এ ধরনের ধ্বংসাত্বক আর কোনো কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি। তবে ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ঢাকায় সকাল–সন্ধ্যা হরতাল পালন করে দলটি।

২০১০ সালে বিএনপি দুই দিন হরতাল করেছিল। ২৭ জুনের পর ওই একই দাবিতে ৩০ নভেম্বর হরতাল পালন করে দলটি।

সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পরিকল্পনা করছে এমন অভিযোগ এনে ২০১১ সালে ৫ জুন একদিন হরতাল করেছিল বিএনপি। এরপর ওই বছরের সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হলে হরতাল কর্মসূচি পালন করতে থাকে দলটি। তবে ২০১২ সালের বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর মৃত্যুর পর টানা হরতাল পালন করে দলটি। ২০১৩ সালের শেষ দিকে অর্থাৎ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে টানা হরতাল করে বিএনপি। সেই হরতাল শেষ হয় ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি এসে।

এরপর এক বছর বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার সময় দেয়। ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে টানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত হরতার–অবরোধের কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। অর্থাৎ টানা ৯৩ দিন ছিল এই কর্মসূচি। এরপর এই ইস্যুতে আর বিএনপি হরতাল–অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেনি।