ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দুঃখজনক : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্দোলনের নামে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেদিন (২৮ অক্টোবর) যেভাবে সাংবাদিকদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে তা অমানবিক।

বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলন যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণের এই সম্মেলনে যোগ দেন সরকার প্রধান।

সম্মেলনের শুরুতে বিএফইউজের নিহত সদস্যদের স্মরণে শোক প্রস্তাব ও তাদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এসময় প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবর বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে।

বিএনপি দুঃশাসন ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই বিএনপির চরিত্র। ২৮ অক্টোবর যেভাবে সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে বাংলাদেশে এমন ঘটনার আগে কখনো ঘটেনি।

তিনি বলেন, বিএনপির নাশকতায় অনেকে আহত হয়েছেন। কেউ কেউ প্রাণ হারিয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমরা চাই তারা দ্রুত সুচিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক।

বিএনপির সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৩-১৪ সালেও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে তারা। তাদের চরিকত্রই হলো খুন, গুম, জ্বালাও-পোড়াও করা। একটা রাজনৈতিক দলের এত অমানবিক আচরণ হতে পারে না।

শেখ হাসিনা বলেন, যুবদলের এক নেতা প্রেস লেখা জ্যাকেট পরে গাড়িতে আগুন দিয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশ পিটিয়েছে। ভেবেছিল তারা রেহাই পেয়ে যাবে। কিন্তু না, তাদের শাস্তি পেতেই হবে। ইতোমধ্যে ধরা পড়ে গেছে তারা।

সরকার প্রধান বলেন, ‘কে গুণগান করল আর কে করল না তার পরোয়া করি না, দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কোন কোন পত্রিকা বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে অন্যভাবে দেখাতে চায়, এদের ধিক্কার জানাই।’

নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন না করে এর বিরুদ্ধে মালিকদের মামলা করা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন সরকার প্রধান। তিনি জানান, দশম ওয়েজবোর্ডের কাজ চলছে। টিভি সাংবাদিকদেরও ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার কাজ চলছে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতি যেন যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে, এটাই ছিল তার (বঙ্গবন্ধু) লক্ষ্য। জাতির পিতার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। তিন বছর সাত মাস তিনি সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের সাংবাদিক এবং কলাকৌশলীসহ মানুষের কর্মসংস্থান যাতে ব্যাপকহারে হয় তার জন্য বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিই। আমাদের একটি মাত্র টেলিভিশন ছিল। যারা সরকারের থাকত তাদেরই অধীন ছিল। কে আমার গুণগান গাইল, কে আমার গুণগান গাইল না, সেটা আমি দেখি না। আমি সব কিছু মুক্ত করে দিই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি তখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করি। তথ্য কমিশন গঠন করি, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে মানুষ যত বেশি, সংবাদপত্রও তত বেশি। অনেক উন্নত দেশ কিংবা ধনী দেশেও এত সংবাদপত্র নেই। বর্তমানে আমাদের পত্রিকার সংখ্যা ৩২৪১টি। অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল রয়েছে ৩৮৭টি। বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি ৩৩টি টেলিভিশন সম্প্রচারে রয়েছে।

টেলিভিশন মালিকদের উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান কলেন, টেলিভিশনের মালিকরা কিন্তু টেলিভিশন চালাচ্ছে। এত সহজ করে দিলাম মালিকরা কেন কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দেয় না, সেটাই আমার প্রশ্ন। কয়েকজন দিয়েছে কিন্তু বেশির ভাগ মালিকই দেয়নি। সেটা হিসাব করা যায়– কারা দিল, কারা দেয়নি। না দিলে বন্ধ করে দিতে পারি, সেটা করতে চাই না। বন্ধ করার ব্যবস্থা কিন্তু আছে। কে কে দিয়েছে সেই হিসাবটা আমাকে দিয়েন, কল্যাণ ট্রাস্টে ফান্ড দেবে তারপর চলবে। এখানে মালিক আছে, তাই একটু বললাম, দেখি ভয় পেয়ে কিছু দেয় নাকি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের দ্বিতীয়টা উৎক্ষেপণের ব্যবস্থা নিয়েছি।

ভাষণে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দুঃখজনক : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৮:৪৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

আন্দোলনের নামে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেদিন (২৮ অক্টোবর) যেভাবে সাংবাদিকদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে তা অমানবিক।

বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলন যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণের এই সম্মেলনে যোগ দেন সরকার প্রধান।

সম্মেলনের শুরুতে বিএফইউজের নিহত সদস্যদের স্মরণে শোক প্রস্তাব ও তাদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এসময় প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবর বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে।

বিএনপি দুঃশাসন ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই বিএনপির চরিত্র। ২৮ অক্টোবর যেভাবে সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে বাংলাদেশে এমন ঘটনার আগে কখনো ঘটেনি।

তিনি বলেন, বিএনপির নাশকতায় অনেকে আহত হয়েছেন। কেউ কেউ প্রাণ হারিয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমরা চাই তারা দ্রুত সুচিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক।

বিএনপির সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৩-১৪ সালেও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে তারা। তাদের চরিকত্রই হলো খুন, গুম, জ্বালাও-পোড়াও করা। একটা রাজনৈতিক দলের এত অমানবিক আচরণ হতে পারে না।

শেখ হাসিনা বলেন, যুবদলের এক নেতা প্রেস লেখা জ্যাকেট পরে গাড়িতে আগুন দিয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশ পিটিয়েছে। ভেবেছিল তারা রেহাই পেয়ে যাবে। কিন্তু না, তাদের শাস্তি পেতেই হবে। ইতোমধ্যে ধরা পড়ে গেছে তারা।

সরকার প্রধান বলেন, ‘কে গুণগান করল আর কে করল না তার পরোয়া করি না, দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কোন কোন পত্রিকা বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে অন্যভাবে দেখাতে চায়, এদের ধিক্কার জানাই।’

নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন না করে এর বিরুদ্ধে মালিকদের মামলা করা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন সরকার প্রধান। তিনি জানান, দশম ওয়েজবোর্ডের কাজ চলছে। টিভি সাংবাদিকদেরও ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার কাজ চলছে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতি যেন যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে, এটাই ছিল তার (বঙ্গবন্ধু) লক্ষ্য। জাতির পিতার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। তিন বছর সাত মাস তিনি সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের সাংবাদিক এবং কলাকৌশলীসহ মানুষের কর্মসংস্থান যাতে ব্যাপকহারে হয় তার জন্য বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিই। আমাদের একটি মাত্র টেলিভিশন ছিল। যারা সরকারের থাকত তাদেরই অধীন ছিল। কে আমার গুণগান গাইল, কে আমার গুণগান গাইল না, সেটা আমি দেখি না। আমি সব কিছু মুক্ত করে দিই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি তখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করি। তথ্য কমিশন গঠন করি, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে মানুষ যত বেশি, সংবাদপত্রও তত বেশি। অনেক উন্নত দেশ কিংবা ধনী দেশেও এত সংবাদপত্র নেই। বর্তমানে আমাদের পত্রিকার সংখ্যা ৩২৪১টি। অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল রয়েছে ৩৮৭টি। বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি ৩৩টি টেলিভিশন সম্প্রচারে রয়েছে।

টেলিভিশন মালিকদের উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান কলেন, টেলিভিশনের মালিকরা কিন্তু টেলিভিশন চালাচ্ছে। এত সহজ করে দিলাম মালিকরা কেন কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দেয় না, সেটাই আমার প্রশ্ন। কয়েকজন দিয়েছে কিন্তু বেশির ভাগ মালিকই দেয়নি। সেটা হিসাব করা যায়– কারা দিল, কারা দেয়নি। না দিলে বন্ধ করে দিতে পারি, সেটা করতে চাই না। বন্ধ করার ব্যবস্থা কিন্তু আছে। কে কে দিয়েছে সেই হিসাবটা আমাকে দিয়েন, কল্যাণ ট্রাস্টে ফান্ড দেবে তারপর চলবে। এখানে মালিক আছে, তাই একটু বললাম, দেখি ভয় পেয়ে কিছু দেয় নাকি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের দ্বিতীয়টা উৎক্ষেপণের ব্যবস্থা নিয়েছি।

ভাষণে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।