ভোট সুষ্ঠু করতে পুলিশ দক্ষ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০১:৪৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪২০ বার পড়া হয়েছে
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পুলিশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যাবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। বুধবার সচিবালয়ে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে পুলিশ বাহিনী ইসির অধীনে যাবে। তারা সুষ্ঠু ভোট করতে দক্ষ।’
নির্বাচন নিয়ে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যেই ঘোষণা হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল। বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়টি সমাধান হওয়ার আগে তফসিল ঘোষণা করা হলে তা দেশের রাজনীতিকে জটিল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। ২০১৩-১৪ সালে তারা সহিংসতা করেছে। তারা জঙ্গিবাদ করেছে। দেশের মানুষ তাদের ভোট দেবে না, মুখ ফিরিয়ে নেবে। সেটা জেনেই তারা জ্বালাও পোড়াও করছে, পুলিশ মারছে। তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সে কারণে তারা এসব সহিংসতা করছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে গৃহযুদ্ধ লাগার সুযোগ নেই। ৫০-৫০ হলে গৃহযুদ্ধ লাগে। আমরা মনে করি, ৯৯/১ ভাগ পার্থক্য। নাশকতা করা যায়, কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না। শেখ হাসিনা জনগণে বিশ্বাস করে, তাদের ম্যান্ডেটে বিশ্বাস করে।’
বিএনপির অবরোধ কর্মসূচিতে সহিংসতা বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গত দুদিন ধরে দেখছেন নাশকতাকারীদের মানুষ ধরে পুলিশে দিচ্ছে। স্কুল-কলেজের ছেলেরা আজ প্ল্যাকার্ড ধরে বলেছে ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে চাই। এসব বন্ধ হোক চায় না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রস্তুত আছে। তারা তাদের কাজ করছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যথেষ্ট দক্ষ।’
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে সহিংসতার পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাই এখন কারাগারে। যারা বাহিরে আছেন তারাও খুব একটা প্রকাশ্যে আসছেন না। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে সারা দেশে ধারাবাহিক ভাবেই হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
বিএনপির এ কর্মসূচিগুলোও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকেনি। হরতাল অবরোধে রাজধানীসহ সারা দেশে শতাধিক যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচন হতে হবে এ বছরের নভেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে। নির্বাচন কমিশন আগেই ধারনা দিয়েছে, ভোট হতে পারে জানুয়ারির প্রথমার্ধে।
নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও তাদের জোট সঙ্গীদের আনতে আওয়ামী লীগের ওপর চাপ আছে। আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো দুই দলকে সংলাপে আনতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আমেরিকা সরকার।
অবশ্য সংলাপের সব সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে। বুধবার সকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মার্কিন সরকারের চিঠি নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন। পরে কাদের সাংবাদিকদের জানান, এখন আর সংলাপের সুযোগ নেই।
কাদের বলেন, ‘বিএনপিকে আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম, শর্ত ছাড়া সংলাপে আসলে তখন আমরা বিবেচনা করব। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই।’
এদিকে বিএনপি বলে আসছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশ নেবে না। এর অংশ হিসেবে গত কয়েক বছরে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, সেগুলোতে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের অনেককেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজপথে নানা কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতা–কর্মীরা।
আওয়ামী লীগও বলে আসছে, উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ায় এটি আর ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচন হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদে রেখে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে।