ঢাকা ০৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কিমকে বহনকারী ট্রেন রাশিয়ায় পৌঁছেছে

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৬২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে বহনকারী ট্রেন রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে। আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা রিয়া নোভোস্তি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।

জাপানের কিয়োডো নিউজ এজেন্সি মঙ্গলবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাশিয়ান সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কিমকে বহনকারী ট্রেনটি উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার সুদূর পূর্বের প্রধান রেল গেটওয়ে খাসান স্টেশনে পৌঁছেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, কিম জং উন মঙ্গলবার ভোরে রাশিয়ায় প্রবেশ করেছেন বলে তারা বিশ্বাস করেন।

রিয়া নোভোস্তি বলছে, ট্রেনটি উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার প্রিমর্স্কি অঞ্চল পাড়ি দিয়েছে। প্রতিবেদনে ট্রেনটির কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থাটি। ওইসব ছবিতে দেখা যায়, গাঢ় সবুজ রঙের একটি ট্রেনকে রাশিয়ান রেলওয়ের লোকোমোটিভ একটি ট্র্যাকের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এর আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল, আজ কিমবাহী ট্রেনটি রাশিয়ায় প্রবেশ করবে।

রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কিম। চার বছরের মধ্যে কিমের দেশের বাইরে এটি প্রথম সফর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈঠকে সম্ভবত মস্কো উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে আর্টিলারি শেল এবং অ্যান্টিট্যাংক মিসাইল চাইবে। অন্যদিকে, উন্নত স্যাটেলাইট ও পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন প্রযুক্তি চাইবে পিয়ংইয়ং। বর্তমানে পুতিন ভ্লাদিভোস্তোকে রয়েছেন। সেখানে একটি ইকোনোমিক ফোরামে অংশ নিবেন তিনি।

কিম-পুতিনের বৈঠক নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘দুদেশের শীর্ষ নেতারা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচন করবেন। প্রতিবেশী ও আমাদের দেশ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করবে যা ঘোষণা বা জনসম্মুখে আনা হবে না।’

এদিকে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র সহায়তা করলে তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই দুই নেতা বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন পেসকভ।

মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক নতুন নয়। উত্তর কোরিয়াকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এমনকি, আইসোলেটেড দেশটিকে কয়েক দশক ধরে সহায়তা করে আসছে মস্কো। গত ৯ সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়ার ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশটির শীর্ষ নেতা কিমকে শুভেচ্ছা জানান পুতিন। পাশাপাশি সর্বক্ষেত্রে পিইংইয়ংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেন আগ্রাসনের শুরু থেকেই মস্কোকে সমর্থন করে আসছে পিয়ংইয়ং। ওয়াশিংটনের দাবি, আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়াকে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে উত্তর কোরিয়া।

বুলেট প্রুফ ট্রেনে কী কী সুবিধা আছে
এই ট্রেনটির ভেতর কী কী সুবিধা আছে সেটির কিছুটা ধারণা পাওয়া গেছে, এতে চড়া কয়েকজন যাত্রীর বর্ণনাতে। তাদেরই একজন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার কোনস্টানটিন পুলিকোভস্কি। তিনি ২০০১ সালে উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা কিম জং দুই-এর সঙ্গে এই ট্রেনে চড়েছিলেন। নিজের আত্মজীবনী ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে ট্রেনটির বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

এতে তিনি লিখেছেন, ‘ট্রেনের ভেতর রাশিয়ান, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানিজ এবং ফরাসি খাবার অর্ডার দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ট্রেনে জীবন্ত চিংড়ি নিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যেন তাজা খাবার পরিবেশন করা যায়। এছাড়া এতে ফ্রান্স থেকে আনা ওয়াইনও ছিল। এই সামরিক কর্মকর্তা তার আত্মজীবনীতে এমনকি বলেছিলেন, ‘পুতিনের ব্যক্তিগত ট্রেনেও এসব সুযোগ-সুবিধা নেই যা এই ট্রেনে আছে।’

রাশিয়ার অপর এক কূটনীতিক, জর্জি তোলোরায়া, ২০১৯ সালে এক লেখনিতে ২০০১ সালে ট্রেনটিতে চড়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ট্রেনটির ভেতর সুস্বাদু গাধার মাংস এবং এক ধরনের ঝিনুক ছিল। এছাড়া রাশিয়ান মদও ছিল এতে।

এই দুইজনই জানিয়েছেন, ট্রেনের যাত্রীদের বিনোদনের জন্য সঙ্গীত শিল্পীসহ আরও অনেক ব্যবস্থা ছিল।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ২০১১ সালে এই ট্রেনের ভেতরই হার্টঅ্যাটাক করে মারা গিয়েছিলেন কিম জং দুই।

২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ডেইলি কোসুন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, এই ট্রেনটিতে ৯০টির মতো বগি আছে। সবুজ রঙ ও হলুদ রঙের ডোরা কাটা এই ট্রেনটির ভেতর কনফারেন্স রুম, অডিয়েন্স চেম্মার এবং বেডরুম রয়েছে। এছাড়া এতে স্যাটেলাইট ফোন এবং বড় আকারের টেলিভিশনের পর্দা আছে। এছাড়া ট্রেনটির প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে এতে চামড়ার তৈরি চেয়ার রয়েছে।

কখন শুরু হয় এই ট্রেনের যাত্রা
উত্তর কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের দাদা কিম টু সাংয়ের সময় এই ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। তিনি ট্রেনটিতে করে ভিয়েতনাম এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে গিয়েছিলেন।

বলা হয়, এই ট্রেনগুলোকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে ভারী অস্ত্রবাহী সেনারা। নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা এসব সেনা লাইন পরীক্ষা করা এবং পরবর্তী স্টেশনে কোনো ধরনের বোমা হামলার ঝুঁকি আছে কি না সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।

কিম জং উনের বাবা ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়াকে শাসন করেন। একটি মতবাদ ছিল, কিমের বাবা প্লেনে উঠতে ভয় পেতেন। এ কারণে তিনি ট্রেনে করেই বেশি যাতায়াত করতেন।

কিমের বাবা ২০০১ সালে দীর্ঘ ১০ দিন ট্রেন ভ্রমণ করে রাশিয়ায় পৌঁছেছিলেন। সেবার তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।

এদিকে কিম জং উন সর্বশেষবার পুতিনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত করেছিলেন ২০১৯ সালে। সেবার তিনি ট্রেনে চেপে গিয়েছিলেন রাশিয়ার সূদুর পূর্বাঞ্চলের ভ্লাদিবোসতোকে।

যদি এবার সত্যিই তিনি আবার ট্রেনে করে রাশিয়ায় যাত্রা শুরু করে থাকেন— তাহলে তাকে বহনকারী ট্রেনটি উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে ছেড়েছে। এরপর এটি তুমাংগ্যাং স্টেশন হয়ে রাশিয়ার সীমান্তে যাবে। সেখান থেকে রাশিয়ান লাইনে ওঠবে ট্রেনটি। উত্তর কোরিয়ার লাইন থেকে রাশিয়ার লাইনে প্রবেশ করতে ট্রেনটির কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কিমকে বহনকারী ট্রেন রাশিয়ায় পৌঁছেছে

আপডেট সময় : ০৭:১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে বহনকারী ট্রেন রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে। আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা রিয়া নোভোস্তি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।

জাপানের কিয়োডো নিউজ এজেন্সি মঙ্গলবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাশিয়ান সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কিমকে বহনকারী ট্রেনটি উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার সুদূর পূর্বের প্রধান রেল গেটওয়ে খাসান স্টেশনে পৌঁছেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, কিম জং উন মঙ্গলবার ভোরে রাশিয়ায় প্রবেশ করেছেন বলে তারা বিশ্বাস করেন।

রিয়া নোভোস্তি বলছে, ট্রেনটি উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ার প্রিমর্স্কি অঞ্চল পাড়ি দিয়েছে। প্রতিবেদনে ট্রেনটির কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থাটি। ওইসব ছবিতে দেখা যায়, গাঢ় সবুজ রঙের একটি ট্রেনকে রাশিয়ান রেলওয়ের লোকোমোটিভ একটি ট্র্যাকের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এর আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল, আজ কিমবাহী ট্রেনটি রাশিয়ায় প্রবেশ করবে।

রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কিম। চার বছরের মধ্যে কিমের দেশের বাইরে এটি প্রথম সফর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈঠকে সম্ভবত মস্কো উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে আর্টিলারি শেল এবং অ্যান্টিট্যাংক মিসাইল চাইবে। অন্যদিকে, উন্নত স্যাটেলাইট ও পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন প্রযুক্তি চাইবে পিয়ংইয়ং। বর্তমানে পুতিন ভ্লাদিভোস্তোকে রয়েছেন। সেখানে একটি ইকোনোমিক ফোরামে অংশ নিবেন তিনি।

কিম-পুতিনের বৈঠক নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘দুদেশের শীর্ষ নেতারা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচন করবেন। প্রতিবেশী ও আমাদের দেশ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করবে যা ঘোষণা বা জনসম্মুখে আনা হবে না।’

এদিকে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে অস্ত্র সহায়তা করলে তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই দুই নেতা বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন পেসকভ।

মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক নতুন নয়। উত্তর কোরিয়াকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এমনকি, আইসোলেটেড দেশটিকে কয়েক দশক ধরে সহায়তা করে আসছে মস্কো। গত ৯ সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়ার ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশটির শীর্ষ নেতা কিমকে শুভেচ্ছা জানান পুতিন। পাশাপাশি সর্বক্ষেত্রে পিইংইয়ংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেন আগ্রাসনের শুরু থেকেই মস্কোকে সমর্থন করে আসছে পিয়ংইয়ং। ওয়াশিংটনের দাবি, আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়াকে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে উত্তর কোরিয়া।

বুলেট প্রুফ ট্রেনে কী কী সুবিধা আছে
এই ট্রেনটির ভেতর কী কী সুবিধা আছে সেটির কিছুটা ধারণা পাওয়া গেছে, এতে চড়া কয়েকজন যাত্রীর বর্ণনাতে। তাদেরই একজন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার কোনস্টানটিন পুলিকোভস্কি। তিনি ২০০১ সালে উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা কিম জং দুই-এর সঙ্গে এই ট্রেনে চড়েছিলেন। নিজের আত্মজীবনী ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে ট্রেনটির বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

এতে তিনি লিখেছেন, ‘ট্রেনের ভেতর রাশিয়ান, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানিজ এবং ফরাসি খাবার অর্ডার দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ট্রেনে জীবন্ত চিংড়ি নিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যেন তাজা খাবার পরিবেশন করা যায়। এছাড়া এতে ফ্রান্স থেকে আনা ওয়াইনও ছিল। এই সামরিক কর্মকর্তা তার আত্মজীবনীতে এমনকি বলেছিলেন, ‘পুতিনের ব্যক্তিগত ট্রেনেও এসব সুযোগ-সুবিধা নেই যা এই ট্রেনে আছে।’

রাশিয়ার অপর এক কূটনীতিক, জর্জি তোলোরায়া, ২০১৯ সালে এক লেখনিতে ২০০১ সালে ট্রেনটিতে চড়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ট্রেনটির ভেতর সুস্বাদু গাধার মাংস এবং এক ধরনের ঝিনুক ছিল। এছাড়া রাশিয়ান মদও ছিল এতে।

এই দুইজনই জানিয়েছেন, ট্রেনের যাত্রীদের বিনোদনের জন্য সঙ্গীত শিল্পীসহ আরও অনেক ব্যবস্থা ছিল।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ২০১১ সালে এই ট্রেনের ভেতরই হার্টঅ্যাটাক করে মারা গিয়েছিলেন কিম জং দুই।

২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ডেইলি কোসুন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, এই ট্রেনটিতে ৯০টির মতো বগি আছে। সবুজ রঙ ও হলুদ রঙের ডোরা কাটা এই ট্রেনটির ভেতর কনফারেন্স রুম, অডিয়েন্স চেম্মার এবং বেডরুম রয়েছে। এছাড়া এতে স্যাটেলাইট ফোন এবং বড় আকারের টেলিভিশনের পর্দা আছে। এছাড়া ট্রেনটির প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে এতে চামড়ার তৈরি চেয়ার রয়েছে।

কখন শুরু হয় এই ট্রেনের যাত্রা
উত্তর কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের দাদা কিম টু সাংয়ের সময় এই ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। তিনি ট্রেনটিতে করে ভিয়েতনাম এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে গিয়েছিলেন।

বলা হয়, এই ট্রেনগুলোকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে ভারী অস্ত্রবাহী সেনারা। নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা এসব সেনা লাইন পরীক্ষা করা এবং পরবর্তী স্টেশনে কোনো ধরনের বোমা হামলার ঝুঁকি আছে কি না সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।

কিম জং উনের বাবা ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়াকে শাসন করেন। একটি মতবাদ ছিল, কিমের বাবা প্লেনে উঠতে ভয় পেতেন। এ কারণে তিনি ট্রেনে করেই বেশি যাতায়াত করতেন।

কিমের বাবা ২০০১ সালে দীর্ঘ ১০ দিন ট্রেন ভ্রমণ করে রাশিয়ায় পৌঁছেছিলেন। সেবার তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।

এদিকে কিম জং উন সর্বশেষবার পুতিনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত করেছিলেন ২০১৯ সালে। সেবার তিনি ট্রেনে চেপে গিয়েছিলেন রাশিয়ার সূদুর পূর্বাঞ্চলের ভ্লাদিবোসতোকে।

যদি এবার সত্যিই তিনি আবার ট্রেনে করে রাশিয়ায় যাত্রা শুরু করে থাকেন— তাহলে তাকে বহনকারী ট্রেনটি উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে ছেড়েছে। এরপর এটি তুমাংগ্যাং স্টেশন হয়ে রাশিয়ার সীমান্তে যাবে। সেখান থেকে রাশিয়ান লাইনে ওঠবে ট্রেনটি। উত্তর কোরিয়ার লাইন থেকে রাশিয়ার লাইনে প্রবেশ করতে ট্রেনটির কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে।