ঢাকা ০৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফিলিস্তিনের প্রতি ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:০৮:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৩৯৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ ও মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে ফিলিস্তিনের হামাস বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ‘অপারেশন তুফান আল আকসা’ এর প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়।

সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে এ সংহতি সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ শেষে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভিসি চত্বর হয়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং, হল পাড়া দিয়ে ঘুরে মধুর ক্যান্টিন ও সেন্ট্রাল মসজিদ হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। পথি মধ্যে যুক্ত হয় আরো অসংখ্য শিক্ষার্থী। সাধুবাদ জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন নারী শিক্ষার্থীরাও ।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘লাব্বাইক লাব্বাইক, লাব্বাইক ইয়া আকসা’, ‘ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইসরায়েল মুরতাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’ ‘ইন্তিফাদা, ইন্তিফাদা’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের সেনারা অবৈধভাবে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণকে নির্যাতন করে যাচ্ছে। ‘শাহবাগীরা’ ইসরাইলে রকেট হামলা নিয়ে সমালোচনা করে, কিন্তু ইসরাইল যখন হামলা করে তখন তারা আওয়াজ তোলে না। নোয়াম চমস্কির ভাষায় বলতে চাই, আমাদের ওপর করা অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য প্রতিরোধ হিসেবে রকেট হামলা করেছি। আমাদের দেশে চক্রান্ত হচ্ছে যে ইসরায়েলের সাথে আমরা নরমালাইজেশনে যাব। এর প্রক্রিয়া হিসেবে আমাদের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল শব্দটি তুলে দেওয়া হয়েছে। সংহতি সমাবেশ থেকে আমাদের একটা দাবি থাকবে আমাদের পাসপোর্টে আবারও সেই লেখাটি পুনর্বহাল করা হোক।’

সমাবেশে ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ যোবায়ের বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মা-বোনেরাও পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে যেভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, ফিলিস্তিনেও দীর্ঘদিন ধরে মা-বোনেরা নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। একজন মুসলিম হিসেবে তাদের ব্যথাটা আমরা অনুভব করতে পারি। বাংলাদেশ সরকারও স্বাধীনতা লগ্ন থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আসছে। আজ আমরা সেই সংহতি জানানোর জন্যই একত্রিত হয়ে হয়েছি।

ঢাবি শিক্ষার্থী জামালউদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, আজকে ফিলিস্তিন যে প্রতিরোধের সময়টা পার করছে। তা আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, যেহেতু আমরাও এই সময়টা পার করে এসেছি। এই ফিলিস্তিনের সাথে আমাদের বাংলাদেশ থেকে সবার আগে সংহতি প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু আমরা এখনো বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার সংহতি প্রকাশের খবর পাইনি। আজকের ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে নিজ ভূমি থেকে দখলদারদের উৎখাত করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আজ যারা আক্রমণ কারা আগে করেছে এই প্রশ্ন তুলছে। তারা হচ্ছে স্বৈরাচারের দোসর। যেখানে আমাদের বাড়ি-ঘর দখল করে, আমাদের শিশুসন্তান, মা-বোনদের ওপর হামলা করছে। আমাদের দেশেও এই শ্রেণির লোক রয়েছে। অথচ ফিলিস্তিনের মসজিদ, হাসপাতাল ও সাধারণ বসতির ওপর হামলা করলে তারা কোনো প্রতিবাদ করে না। সেখানে কে আগে হামলা করবে সেটা তো জানা কথা। যারা নির্যাতনের শিকার তারাই তো প্রতিরোধ করবে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা ফিলিস্তিনের প্রতিবাদী জনতার সম্প্রতি পরিচালিত ‘তুফান আল আকসার’ প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আমরা বার্তা দিতে চাই যে অবৈধ ভাবে দখলদারিত্ব করে তারা টিকে থাকতে পারবে না ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফিলিস্তিনের প্রতি ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশ

আপডেট সময় : ০৩:০৮:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ ও মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে ফিলিস্তিনের হামাস বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ‘অপারেশন তুফান আল আকসা’ এর প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়।

সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে এ সংহতি সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ শেষে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভিসি চত্বর হয়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং, হল পাড়া দিয়ে ঘুরে মধুর ক্যান্টিন ও সেন্ট্রাল মসজিদ হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। পথি মধ্যে যুক্ত হয় আরো অসংখ্য শিক্ষার্থী। সাধুবাদ জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন নারী শিক্ষার্থীরাও ।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘লাব্বাইক লাব্বাইক, লাব্বাইক ইয়া আকসা’, ‘ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইসরায়েল মুরতাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’ ‘ইন্তিফাদা, ইন্তিফাদা’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের সেনারা অবৈধভাবে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণকে নির্যাতন করে যাচ্ছে। ‘শাহবাগীরা’ ইসরাইলে রকেট হামলা নিয়ে সমালোচনা করে, কিন্তু ইসরাইল যখন হামলা করে তখন তারা আওয়াজ তোলে না। নোয়াম চমস্কির ভাষায় বলতে চাই, আমাদের ওপর করা অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য প্রতিরোধ হিসেবে রকেট হামলা করেছি। আমাদের দেশে চক্রান্ত হচ্ছে যে ইসরায়েলের সাথে আমরা নরমালাইজেশনে যাব। এর প্রক্রিয়া হিসেবে আমাদের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল শব্দটি তুলে দেওয়া হয়েছে। সংহতি সমাবেশ থেকে আমাদের একটা দাবি থাকবে আমাদের পাসপোর্টে আবারও সেই লেখাটি পুনর্বহাল করা হোক।’

সমাবেশে ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ যোবায়ের বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মা-বোনেরাও পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে যেভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, ফিলিস্তিনেও দীর্ঘদিন ধরে মা-বোনেরা নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। একজন মুসলিম হিসেবে তাদের ব্যথাটা আমরা অনুভব করতে পারি। বাংলাদেশ সরকারও স্বাধীনতা লগ্ন থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আসছে। আজ আমরা সেই সংহতি জানানোর জন্যই একত্রিত হয়ে হয়েছি।

ঢাবি শিক্ষার্থী জামালউদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, আজকে ফিলিস্তিন যে প্রতিরোধের সময়টা পার করছে। তা আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, যেহেতু আমরাও এই সময়টা পার করে এসেছি। এই ফিলিস্তিনের সাথে আমাদের বাংলাদেশ থেকে সবার আগে সংহতি প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু আমরা এখনো বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার সংহতি প্রকাশের খবর পাইনি। আজকের ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে নিজ ভূমি থেকে দখলদারদের উৎখাত করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আজ যারা আক্রমণ কারা আগে করেছে এই প্রশ্ন তুলছে। তারা হচ্ছে স্বৈরাচারের দোসর। যেখানে আমাদের বাড়ি-ঘর দখল করে, আমাদের শিশুসন্তান, মা-বোনদের ওপর হামলা করছে। আমাদের দেশেও এই শ্রেণির লোক রয়েছে। অথচ ফিলিস্তিনের মসজিদ, হাসপাতাল ও সাধারণ বসতির ওপর হামলা করলে তারা কোনো প্রতিবাদ করে না। সেখানে কে আগে হামলা করবে সেটা তো জানা কথা। যারা নির্যাতনের শিকার তারাই তো প্রতিরোধ করবে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা ফিলিস্তিনের প্রতিবাদী জনতার সম্প্রতি পরিচালিত ‘তুফান আল আকসার’ প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আমরা বার্তা দিতে চাই যে অবৈধ ভাবে দখলদারিত্ব করে তারা টিকে থাকতে পারবে না ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে না।