ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আমাজনের গহীন বনে মিলল প্রাচীন শহর

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩০:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এবার আমাজনের যে রহস্যের উন্মোচন হলো, তা সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবে। এই রেইনফরেস্ট নিয়ে প্রথাগত ধারণাকেই বুড়ো আঙুল দেখাবে এই উন্মোচন। আমাজনের গহীণ অরণ্যে এবার পাওয়া গেছে শহর। লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা গাছপালার আড়ালে হাজার বছর ধরে অগোচরে ছিল বেশ বড় আয়তনের পুরোনো এই শহর।

মহাবন আমাজনের বাসিন্দাদের নিয়ে সবার ধারণা—সেখানে ছোট ছোট আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস। তারা গাছের বাকল ও লতাপাতাকে দেহের আবরণ হিসেবে ব্যবহার করে। এমনকি এক সময় এখানকার বাসিন্দারা নগ্ন হয়ে থাকত বলেও ধারণা করা হয়। এখনো কিছু জাতি নগ্ন হয়ে থাকে বলেই বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্ব ইকুয়েডরের ইউপানো এলাকার কাছের এই শহরের অস্তিত্ব প্রথম জানতে পেরেছেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এই বিভাগের প্রধান স্টেফান রোস্টারিন জানান, এই শহরের রাস্তা ও খালগুলো ইউপানো এলাকার বাড়িঘর ও প্লাজার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণে এই এলাকার মাটি আগের চেয়ে অনেক উর্বর হয়। কিন্তু এই আগ্নেয়গিরির কারণেই এই শহর ও সমাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পেরুর মাচুপিচুর মতো শহরের খোঁজ আগেই পাওয়া গেছে। এবার পাওয়া শহরের মানুষেরা যাযাবর জীবনযাপন করত, নাকি ছোট্ট বসতি গড়ে থাকত, তা এখনো গবেষণাধীন।

ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের ইনভেস্টিগেশন বিভাগের প্রধান স্টেফান রোস্টারিন বলেন, ‘আমাজনে খোঁজে পাওয়া সবচেয়ে পুরোনো সাইট এই শহর। সভ্যতা নিয়ে আমাদর সব ধারণাই ইউরোপকেন্দ্রিক। কিন্তু এই আবিষ্কার প্রমাণ করল, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে আমাদের ভাবনায় পরিবর্তন আসা দরকার।’

গবেষক দলের আরেক সদস্য অ্যান্তোইন ডোরিসন বলছেন, ‘আমাজনের সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের যে ধারণা ছিল, তা ভুল প্রমাণ করল এই শহর।’

গবেষকেরা বলছেন, এই শহর আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে ওঠে। এখানে এক হাজার বছর ধরে মানুষ বসবাস করেছে। তবে সেখানে একই সঙ্গে কতজন মানুষ থাকত, তা বলা যাচ্ছে না। আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১ লাখ হতে পারে।

৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় খুঁড়ে এসব তথ্য জানতে পেরেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। রাস্তাগুলোই এই গবেষণার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন গবেষক অ্যান্তোইন ডোরিসন। তিনি জানান, এসব রাস্তা সুপরিকল্পিতভাবে বানানো। ছোট ছোট নয়, লম্বা দূরত্বের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আর এর বাঁকগুলোও একদম সুচারু।

এর আগে ১৯৭০–এর দশকে এই শহরের কিছুটা নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। ২৫ বছরের গবেষণার পর এবার পুরোপুরিভাবে জানা গেল, এখানে শহর ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আমাজনের গহীন বনে মিলল প্রাচীন শহর

আপডেট সময় : ০৭:৩০:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪

এবার আমাজনের যে রহস্যের উন্মোচন হলো, তা সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবে। এই রেইনফরেস্ট নিয়ে প্রথাগত ধারণাকেই বুড়ো আঙুল দেখাবে এই উন্মোচন। আমাজনের গহীণ অরণ্যে এবার পাওয়া গেছে শহর। লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা গাছপালার আড়ালে হাজার বছর ধরে অগোচরে ছিল বেশ বড় আয়তনের পুরোনো এই শহর।

মহাবন আমাজনের বাসিন্দাদের নিয়ে সবার ধারণা—সেখানে ছোট ছোট আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস। তারা গাছের বাকল ও লতাপাতাকে দেহের আবরণ হিসেবে ব্যবহার করে। এমনকি এক সময় এখানকার বাসিন্দারা নগ্ন হয়ে থাকত বলেও ধারণা করা হয়। এখনো কিছু জাতি নগ্ন হয়ে থাকে বলেই বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্ব ইকুয়েডরের ইউপানো এলাকার কাছের এই শহরের অস্তিত্ব প্রথম জানতে পেরেছেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এই বিভাগের প্রধান স্টেফান রোস্টারিন জানান, এই শহরের রাস্তা ও খালগুলো ইউপানো এলাকার বাড়িঘর ও প্লাজার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণে এই এলাকার মাটি আগের চেয়ে অনেক উর্বর হয়। কিন্তু এই আগ্নেয়গিরির কারণেই এই শহর ও সমাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পেরুর মাচুপিচুর মতো শহরের খোঁজ আগেই পাওয়া গেছে। এবার পাওয়া শহরের মানুষেরা যাযাবর জীবনযাপন করত, নাকি ছোট্ট বসতি গড়ে থাকত, তা এখনো গবেষণাধীন।

ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের ইনভেস্টিগেশন বিভাগের প্রধান স্টেফান রোস্টারিন বলেন, ‘আমাজনে খোঁজে পাওয়া সবচেয়ে পুরোনো সাইট এই শহর। সভ্যতা নিয়ে আমাদর সব ধারণাই ইউরোপকেন্দ্রিক। কিন্তু এই আবিষ্কার প্রমাণ করল, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে আমাদের ভাবনায় পরিবর্তন আসা দরকার।’

গবেষক দলের আরেক সদস্য অ্যান্তোইন ডোরিসন বলছেন, ‘আমাজনের সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের যে ধারণা ছিল, তা ভুল প্রমাণ করল এই শহর।’

গবেষকেরা বলছেন, এই শহর আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে ওঠে। এখানে এক হাজার বছর ধরে মানুষ বসবাস করেছে। তবে সেখানে একই সঙ্গে কতজন মানুষ থাকত, তা বলা যাচ্ছে না। আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১ লাখ হতে পারে।

৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় খুঁড়ে এসব তথ্য জানতে পেরেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। রাস্তাগুলোই এই গবেষণার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন গবেষক অ্যান্তোইন ডোরিসন। তিনি জানান, এসব রাস্তা সুপরিকল্পিতভাবে বানানো। ছোট ছোট নয়, লম্বা দূরত্বের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আর এর বাঁকগুলোও একদম সুচারু।

এর আগে ১৯৭০–এর দশকে এই শহরের কিছুটা নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। ২৫ বছরের গবেষণার পর এবার পুরোপুরিভাবে জানা গেল, এখানে শহর ছিল।