ঢাকা ১২:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ডলার সংকটে বিপাকে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪
  • / ৩৪০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডলার সংকটে টিকিট বিক্রির মুনাফা নিজ দেশে নিতে পারছে না বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করা বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। এয়ারলাইন্সগুলোর আটকে পড়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। এমন অবস্থায় দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইন্স।

আটাব’র সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘শিডিউল ব্যাংক বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে পর্যাপ্ত ডলার দিতে পারছে না। সেক্ষেত্রে তাদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা টিকিটের দামটা বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

এ অবস্থায় বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইন্স। টিকিটের দামও বেড়েছে রুটভেদে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ। তাই কম ভাড়ার টিকিট পেতে অনেকেই পাশের দেশ থেকে টিকিট কাটছে। এতে হুমকিতে পড়েছে সাড়ে তিন হাজার ট্রাভেল এজেন্সির প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। বিদেশি ট্রাভেল এজেন্সিকে টাকা পরিশোধে বেছে নেয়া হচ্ছে অবৈধ পথ।

আব্দুস সালাম আরেফ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কম দামে টিকিট না পেলে, বিদেশের যেকোন দেশ থেকে তারা টিকিট করে নিচ্ছে। এই টাকা বৈধ পধে পরিশোধ করার কোন সুযোগ নাই। তখন কিন্তু হুন্ডি বা অন্য চ্যানেলে টাকা চলে যাচ্ছে।’

এয়ারলাইন্সগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, আয়াটার সবশেষ তথ্য বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরতের অপেক্ষায় আটকে পড়া অর্থের পরিমাণ ৩২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি। গতবছর এর পরিমাণ ছিলো ২১ কোটি ৪০ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে আটক পড়া অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি।

প্রায় ৩০০ এয়ারলাইনন্সের এই অভিভাবক সংস্থা ইতোমধ্যেই টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের অর্থ দিতে না পারায় বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় ‘সর্বোচ্চ খারাপ’ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সমস্যায় দেশের ইমেজ সংকটের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও নিরুৎসাহিত হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘এটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের থেকে তারা পাওনা পাচ্ছে না। এটা অন্যান্য খাতে আমাদের দেশের বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে।’

সমস্যা সমাধানে সামষ্টিক অর্থনীতিতে সম্ভাবনাময় অ্যাভিয়েশন খাতকে অগ্রাধিকার দেবার পরামর্শ দিলেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি আরও বলেন, ‘এই সমস্যাটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার দিকে আমাদের মনযোগ দিতে হবে। কারণ এটার সাথে তৃতীয় টার্মিনাল, বাণিজ্য, এভিয়েশনসহ অনেক কিছু এটার সাথে জড়িত।’

বৈশ্বিক সংকটকে এই সমস্যার জন্য দায়ী করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, ডলার সংকটের কারণে পুরোটা একসাথে দেয়া সম্ভব না হলেও ধাপে ধাপে পাওনা অর্থের যোগান দেয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে গেলো বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়েছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ। চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট বন্ধ করেছে ওমান এয়ার ও জাজিরা এয়ারওয়েজ। আর ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছে কুয়েত এয়ারওয়েজসহ বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স।

নিউজটি শেয়ার করুন

ডলার সংকটে বিপাকে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো

আপডেট সময় : ০২:০৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

ডলার সংকটে টিকিট বিক্রির মুনাফা নিজ দেশে নিতে পারছে না বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করা বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। এয়ারলাইন্সগুলোর আটকে পড়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। এমন অবস্থায় দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইন্স।

আটাব’র সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘শিডিউল ব্যাংক বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে পর্যাপ্ত ডলার দিতে পারছে না। সেক্ষেত্রে তাদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা টিকিটের দামটা বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

এ অবস্থায় বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইন্স। টিকিটের দামও বেড়েছে রুটভেদে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ। তাই কম ভাড়ার টিকিট পেতে অনেকেই পাশের দেশ থেকে টিকিট কাটছে। এতে হুমকিতে পড়েছে সাড়ে তিন হাজার ট্রাভেল এজেন্সির প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। বিদেশি ট্রাভেল এজেন্সিকে টাকা পরিশোধে বেছে নেয়া হচ্ছে অবৈধ পথ।

আব্দুস সালাম আরেফ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কম দামে টিকিট না পেলে, বিদেশের যেকোন দেশ থেকে তারা টিকিট করে নিচ্ছে। এই টাকা বৈধ পধে পরিশোধ করার কোন সুযোগ নাই। তখন কিন্তু হুন্ডি বা অন্য চ্যানেলে টাকা চলে যাচ্ছে।’

এয়ারলাইন্সগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, আয়াটার সবশেষ তথ্য বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরতের অপেক্ষায় আটকে পড়া অর্থের পরিমাণ ৩২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি। গতবছর এর পরিমাণ ছিলো ২১ কোটি ৪০ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে আটক পড়া অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি।

প্রায় ৩০০ এয়ারলাইনন্সের এই অভিভাবক সংস্থা ইতোমধ্যেই টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের অর্থ দিতে না পারায় বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় ‘সর্বোচ্চ খারাপ’ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সমস্যায় দেশের ইমেজ সংকটের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও নিরুৎসাহিত হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘এটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের থেকে তারা পাওনা পাচ্ছে না। এটা অন্যান্য খাতে আমাদের দেশের বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে।’

সমস্যা সমাধানে সামষ্টিক অর্থনীতিতে সম্ভাবনাময় অ্যাভিয়েশন খাতকে অগ্রাধিকার দেবার পরামর্শ দিলেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি আরও বলেন, ‘এই সমস্যাটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার দিকে আমাদের মনযোগ দিতে হবে। কারণ এটার সাথে তৃতীয় টার্মিনাল, বাণিজ্য, এভিয়েশনসহ অনেক কিছু এটার সাথে জড়িত।’

বৈশ্বিক সংকটকে এই সমস্যার জন্য দায়ী করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, ডলার সংকটের কারণে পুরোটা একসাথে দেয়া সম্ভব না হলেও ধাপে ধাপে পাওনা অর্থের যোগান দেয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে গেলো বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়েছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ। চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট বন্ধ করেছে ওমান এয়ার ও জাজিরা এয়ারওয়েজ। আর ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছে কুয়েত এয়ারওয়েজসহ বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স।