ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঈদে গাজায় ৪৩ হাজার শিশুর পাশে নেই কেউ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রমজান মাসের শেষে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর যখন মুসলিমরা উদযাপন করছে, তখন গাজার শিশুরা বলছে তাদের কাছ থেকে ঈদের আনন্দ ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ৪৩ হাজারের বেশি শিশু বাস করে যাদের একজন বা বাবা-মা উভয়ই নেই। সঠিক পরিসংখ্যান বের করা কঠিন, কিন্তু ইউনিসেফ ধারণা করেছে যে, গাজা ভূখণ্ডে অন্তত ১৭ হাজার শিশু সঙ্গীহীন অবস্থায় রয়েছে অথবা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাবা -মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা হয়ে পড়েছে।

সাধারণত ঈদ বলতে পরিবারের সদস্যদের জমায়েত এবং এই উৎসব পালন করতে বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি করাকে বুঝায়। কিন্তু এ দুইটিরই অনুপস্থিতি ও চলমান যুদ্ধের কারণে শিশুদের শুধুমাত্র তাদের আগের স্মৃতি ধারণ করেই থাকতে হবে। গাজাবাসীদের টেবিলে ঈদে যেসব খাবার থাকে তার অন্যতম হচ্ছে সুমাকিয়া (মাংসের ঝোল) এবং ফাসিখ (লবণাক্ত মাছ)। কিন্তু উৎসবের প্রধান আকর্ষণ থাকে ঈদ বিস্কুট।

এমন কোন ক্যাম্প নেই যেখানকার শিশুরা একজন বা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে- এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায় নি। যেমন লায়ান ও তার ১৮ মাস বয়সী বোন সিয়ার। তাদের পরিবারে একমাত্র তারাই এখন বেঁচে রয়েছে। পরিবারের বাকি সদস্যরা গাজায় অক্টোবরের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে শহরের আল আহলি হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলো। সে সময় তারা নিহত হয়। লায়ান সেই রাতে তার পরিবারের ৩৫ সদস্যকে হারায়। তাদের মধ্যে বাবা–মা ও নিজের পাঁচ ভাই বোন ও ছিলো।

আমাদের পরিবার হাসপাতালে পৌঁছানোর মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে দুইটা ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের ওপর আঘাত করে। আমি জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরিবারের সব সদস্যরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। গাজা শহরের জনাকীর্ণ হাসপাতালে এই হামলায় শত শত লোক নিহত হয়।

যুদ্ধে সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগে, লায়ান ঈদের আগে বাবা-মার সঙ্গে নতুন জামা কিনতে যেতো। তারা ঈদে বিস্কুট বানাতো যা স্থানীয়ভাবে এটি ‘মামোল’ নামে পরিচিত। তারা পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতো। কিন্তু এই বছর আর কোন পারিবারিক জমায়েত হবে না। এই ঈদে কেউ তাদের দেখতে আসবে না।

লায়ানের মতো তার আরেক কাজিন ১৪ বছর বয়সী মাহমুদও যুদ্ধে অনাথ হয়েছে। মাহমুদ তার বাবা-মা ও বেশিরভাগ ভাই-বোনকেই আল আহলি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একই ঘটনায় হারিয়েছে। যখন ওই হামলা হয় তখন সে বাইরে তার পরিবারের জন্য পানি আনতে গিয়েছিলো। সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈদে গাজায় ৪৩ হাজার শিশুর পাশে নেই কেউ

আপডেট সময় : ০৪:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪

রমজান মাসের শেষে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর যখন মুসলিমরা উদযাপন করছে, তখন গাজার শিশুরা বলছে তাদের কাছ থেকে ঈদের আনন্দ ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ৪৩ হাজারের বেশি শিশু বাস করে যাদের একজন বা বাবা-মা উভয়ই নেই। সঠিক পরিসংখ্যান বের করা কঠিন, কিন্তু ইউনিসেফ ধারণা করেছে যে, গাজা ভূখণ্ডে অন্তত ১৭ হাজার শিশু সঙ্গীহীন অবস্থায় রয়েছে অথবা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাবা -মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা হয়ে পড়েছে।

সাধারণত ঈদ বলতে পরিবারের সদস্যদের জমায়েত এবং এই উৎসব পালন করতে বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি করাকে বুঝায়। কিন্তু এ দুইটিরই অনুপস্থিতি ও চলমান যুদ্ধের কারণে শিশুদের শুধুমাত্র তাদের আগের স্মৃতি ধারণ করেই থাকতে হবে। গাজাবাসীদের টেবিলে ঈদে যেসব খাবার থাকে তার অন্যতম হচ্ছে সুমাকিয়া (মাংসের ঝোল) এবং ফাসিখ (লবণাক্ত মাছ)। কিন্তু উৎসবের প্রধান আকর্ষণ থাকে ঈদ বিস্কুট।

এমন কোন ক্যাম্প নেই যেখানকার শিশুরা একজন বা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে- এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায় নি। যেমন লায়ান ও তার ১৮ মাস বয়সী বোন সিয়ার। তাদের পরিবারে একমাত্র তারাই এখন বেঁচে রয়েছে। পরিবারের বাকি সদস্যরা গাজায় অক্টোবরের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে শহরের আল আহলি হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলো। সে সময় তারা নিহত হয়। লায়ান সেই রাতে তার পরিবারের ৩৫ সদস্যকে হারায়। তাদের মধ্যে বাবা–মা ও নিজের পাঁচ ভাই বোন ও ছিলো।

আমাদের পরিবার হাসপাতালে পৌঁছানোর মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে দুইটা ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের ওপর আঘাত করে। আমি জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরিবারের সব সদস্যরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। গাজা শহরের জনাকীর্ণ হাসপাতালে এই হামলায় শত শত লোক নিহত হয়।

যুদ্ধে সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগে, লায়ান ঈদের আগে বাবা-মার সঙ্গে নতুন জামা কিনতে যেতো। তারা ঈদে বিস্কুট বানাতো যা স্থানীয়ভাবে এটি ‘মামোল’ নামে পরিচিত। তারা পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতো। কিন্তু এই বছর আর কোন পারিবারিক জমায়েত হবে না। এই ঈদে কেউ তাদের দেখতে আসবে না।

লায়ানের মতো তার আরেক কাজিন ১৪ বছর বয়সী মাহমুদও যুদ্ধে অনাথ হয়েছে। মাহমুদ তার বাবা-মা ও বেশিরভাগ ভাই-বোনকেই আল আহলি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একই ঘটনায় হারিয়েছে। যখন ওই হামলা হয় তখন সে বাইরে তার পরিবারের জন্য পানি আনতে গিয়েছিলো। সূত্র: বিবিসি